সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

The Legacy of Ram: Prologue- Part4 (দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪)- A mystery, post-apocalyptic fiction Bengali Novel series by Aritra Das

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (The Legacy of Ram- Prologue):  অধ্যায়৪  ( PART4 ) - A Bengali science fiction, mystery, suspense thriller and post-apocalyptic fiction novel series by Aritra Das, the Bengali writer   The Legacy of Ram: Prologue (আদি পর্ব) Part4 [দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (প্রলগ) গল্পটির প্রথম তিনটি পর্ব প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে, পেজে গল্পের শেষে অন্যান্য লিঙ্কগুলি পাওয়া যাবে। অবশ্যই পড়বেন] দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪ অধ্যায়৩ থেকে শেষের কিছুটা অংশ- -“অভিযুক্ত… দ্যূহ… অভিযুক্ত… দ্যূহ… দ্যূহ…” একটি কথাই পর্যায়ক্রমে উচ্চারণ করে চলেছে ‘মদন’! অস্পষ্টভাবে ‘ব্যূহ’ কথাটি মহর্ষির কানে শোনাল ‘দ্যূহ’। কিন্তু সেদিকে তখন মন নেই তাঁর, তিনি শুধু বিস্মিত এই ভেবে যে এই আদিম মানব দম্পতি তা হলে কথা বলতেও সক্ষম! তিনি আবিষ্ট হয়ে তাকিয়েই থাকলেন তাদের দিকে। -“বিচারকরা সকলেই আপনার জন্য অপেক্ষমান, মহর্ষি! চলুন, আর বেশি দেরি করা উচিৎ হবে না। আমি উপযাচক হয়ে এগিয়ে এসেছিলাম আপনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আসুন।” -“আমাকে পথ দেখান, ভগবান!”   মাথা নী...

বহুযুগের ওপার হতে- পর্ব ৭ | Bengali Science fiction audio story | Aritra...

বহুযুগের ওপার হতে- পর্ব ৭ | Bengali Science fiction audio story |Aritra Das|Historical novel


Bahujuger opaar hote is a Bengali science fiction, suspense-thriller audio story. This is a Bangla fiction novel, the story tells about an ancient time travelling design of the Gods which needs to be activated in our time...and the way it was activated! A must-see web series which breaks the story-line in many time frames.


Background music source: YOUTUBE LIBRARY
Background Sound Effects: https://mixkit.co/free-sound-effects/heartbeat/

বহুযুগের ওপার হতে- পর্ব ৬ Video here: https://youtu.be/3pRh2K2bK8Y

VISIT US AGAIN

সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রেক্ষাপট, ভিন্ন দেশ, তাদের মরণশীল সংগ্রাম বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে- আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু। আর তার সঙ্গে আছে অপর এক বিষ্ময়। বহুকাল আগে সৌভদ্রের হাত থেকে নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়া সেই নেত্র- তার কি হল? তা কি মুছে গেল ইতিহাসের বুক থেকে? দেবতাদের মন্দিরের রুদ্ধদ্বার কি তবে আর খুলবে না? সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে, ভিন্ন এক সময়ে তৈরি হওয়া এক পরিবর্তিত পরিস্থিতি- কি হবে এবার? দেখতে থাকুন সপ্তম পর্ব। কেমন লাগছে তা অবশ্যই আমাদের জানান মন্তব্যের মাধ্যমে।

Watch the video till the end. SUBSCRIBE. If you liked the video then do COMMENT, LIKE, SHARE. Thanks.

Story, voice-over, Concept and Editing: Aritra Das
Graphics: Shri Biswanath Dey

[১লা জানুয়ারি, ১৯৭৩- ডান্যাং শহরের ১০ মাইল উপকন্ঠে, দক্ষিণ ভিয়েতনাম]

 

-“ভি.সি! ডানদিক দিয়ে!!!”

 

-“বন্দুক হাতে মরা মুরগির মত না ঝিমিয়ে একটু দিল খুলে গুলি কর, ছোঁড়ারা…”

 

-“মুরগি মরলে আবার ঝিমোবে কি? যত্তসব অপদা-”

 

-“এটা কি ওয়েলস ইংরেজিতে বাতচিৎ আর কথায় ভুল ধরবার সময়? ডানদিকটা ফাঁকা কর, ডানদিকে…”

 

-“প্যান্টটা চেঞ্জ করে আসব সার্জ? শেলিং-এর সময় থেকে ভিজা প্যান্ট পরে গুলি চালাচ্ছি-”

 

-“যাও সামনের ঐ ভি.সি.গুলোকে জিজ্ঞেস করে এস-”

 

-“ওর আর প্যান্ট চেঞ্জের দরকার হবে না সার্জ…ও গুলি খেয়েছে!”

 

আড়চোখে নিজের বাঁদিকে তাকালেন সার্জেন্ট গিবস; তার পাশে দাঁড়িয়ে ভিজে প্যান্ট চেঞ্জের আবেদন জানাচ্ছিলেন কনস্টেবল স্যালি; আবেদন জানানোর পরই একটাই গুলি লাগে বাম চোয়ালের নীচে, খুব সম্ভবতঃ আর্তনাদ করবারও সময় পান নি তিনি! রক্তস্নাত হয়ে মাটিতে পড়ে গিবসের আরও একজন সহযোদ্ধা। একপলক তাকে দেখে নিয়েই সামনের অন্ধকার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে লাগলেন গিবস, তিনি ঐভাবে মাটিতে শুয়ে থাকতে চান না!

 

দক্ষিণ ভিয়েতনামের ডান্যাং শহর থেকে মাত্র দশমাইল দূরে এসে আটকে গিয়েছিলেন সার্জেন্ট গিবস ও তার ইউনিটের প্রতিটি সদস্য। খাতায়-কলমে ‘অস্ত্রবিরতি’ চলছে; মার্কিন সরকার ভিয়েতনামের মাটি থেকে সমস্ত সৈন্য প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গিবসদের ওপরে আদেশ ছিল কাছাকাছির মধ্যে দক্ষিণ ভিয়েতনামের ডান্যাং শহরের সদর সেনা দপ্তরে রিপোর্ট করতে হবে, পরবর্ত্তী নির্দেশ না আসা অবধি ঐখানেই অবস্থান করতে হবে। সেই মতন সরে আসছিলেন তিনি, তার ইউনিটের সকল সেনা সমেত।

 

কিন্তু ‘অস্ত্রবিরতি’-র মাঝখানে আবার আগুন জ্বলে উঠল; ভিয়েতকংদের কাছে কি বার্তা গেল খোদায় মালুম, আবার শুরু হল যুদ্ধ! এদিকে মার্কিন আর্মির প্রায় প্রতিটি ইউনিট সরে এসেছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ চেকপোস্ট থেকে; এই অবস্থায় নতুন করে দাবানল জ্বলে উঠতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা ভোগ করলেন তারা। রেশন নেই, সাপ্লাই নেই- মৃত্যু ছেয়ে ফেলল তাদের চারদিক থেকে! গিবসরাও ফিরছিলেন নিজেদের গন্তব্যে, তারাও আটকা পড়ে গেলেন স্বস্থানে, ভিয়েতকংদের ক্রমাগত আক্রমণ বিপর্যস্ত করে তুলল তাদের।

 

‘পিপলস্ আর্মি’র প্রতিরোধ এইভাবে যে তাদের বিপদে ফেলে দেবে তা বোধহয় ভাবতেও পারেন নি গিবস; শেষ তিনদিন নরকদর্শন হয়েছে তাদের। নিজপক্ষের প্রচুর যোদ্ধা খুইয়েছেন তারা এই শেষ তিন দিনে; মুষ্টিমেয় যে কয়জন সঙ্গী বেঁচে ছিলেন তাদের নিয়েই প্রতিরোধ করে কোনমতে শেষপর্যন্ত জয়লাভ করেন তিনি, পশ্চাদপসারণ করে অবশেষে পালাতে বাধ্য হয় ভিয়েতকংরা! তাদের পক্ষেও যে ক্ষতির বহর মারাত্মক, তা ধরতে পেরেছিলেন গিবস- যুদ্ধান্তে পড়ে থাকা মৃতদেহের স্তুপ ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্রের বহর দেখে।

 

যুদ্ধের পর ক্ষয়ক্ষতির সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে সদর দপ্তরে তা পাঠিয়ে একটি ইজিচেয়ার খুঁজে পেয়ে কোনমতে সেটিকে খাড়া করে তাতে গা এলিয়ে বসেছিলেন গিবস; রাত্রিবেলায় এই তিনঘন্টার যুদ্ধ তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে! ক্লান্তিতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন তিনি, এমন সময় অর্ডারলি এসে খবর দেন- একজন আদত ভিয়েতকং জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে!

 

বিশ্রাম মাথায় উঠল; লাফ দিয়ে উঠে পড়লেন সার্জেন্ট গিবস! যুদ্ধের এই আচমকা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শত্রুপক্ষের সেনাবাহিনীর একজন নিয়মিত সদস্য যে অত্যন্ত দামী, সে বিষয়ে কোন কিছু আর বলবার অপেক্ষা রাখে না।

 

-“ডককে খবর পাঠাও-”

-“ডাক্তারসাহেব আগেই খবর পেয়ে গিয়েছেন স্যার, তিনি এখন রোগীর সেবায়-”

 

-“রোগী?”

 

-“তিনটে গুলি বুকে লেগেছে স্যার! আমরা যখন ওকে পাই খুব আস্তে শ্বাস পড়ছিল, আমরা তো ভেবেছিলাম মৃত! একটা হালকা গোঙানির আওয়াজে বুঝতে পারি যে ভিতরে কিছু জান তখনও আছে-”

 

-“চল!”

 

কাছেই একটি পুরনো প্যাগোডা ছিল, ক্রমাগত শেলিং-এ বর্তমানে কোনমতে তার কাঠামোটি টিঁকে আছে মাত্র। সেখানেই এনে রাখা হয়েছিল যুদ্ধবন্দীকে; অর্ডারলি দূর থেকে তা দেখিয়ে দিতেই সেখানে প্রবেশ করলেন গিবস। মেঝেতে শোয়ানো হয়েছে গুলি-লাগা ভিয়েতকংটিকে, পাশে বসে তাকে পরীক্ষা করছিলেন ইউনিটের সবেধন নীলমণি ডাক্তার ডসন; গিবস প্রবেশ করতে দেখা শেষ করে উঠে দাঁড়ালেন তিনি।

 

-“ডক?”

 

মাথা নাড়লেন ডাক্তার, তারপর কাছিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে বললেন-

 

-“এর নাম বন্ খুয়াম। এর তিনটি গুলি লেগেছে সার্জ! প্রথম দুটি অতটা মারাত্মক নয়, কিন্তু তৃতীয়টি একেবারে হার্টের মূল ধমনী ফাটিয়ে দিয়েছে। এর স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ নয়! মর্ফিন দিয়েছি, রোগীর জ্ঞানও ফেরৎ এসেছে। যা জিজ্ঞেস করবার এইবেলা জিজ্ঞেস করে একে শান্তিতে মরতে দিন।”

 

ডাক্তারের হাত থেকে আর্মি ট্যাগটি নিয়ে সেটি উল্টে নামটা দেখে নিলেন, তারপর ধীরপায়ে রোগীর পাশে এসে বসলেন গিবস; তাকালেন তার দিকে। একজন প্রৌঢ় কমিউনিস্ট সৈনিক, ‘রেডস্টার’ ইউনিফর্ম পরণে। ঘনঘন শ্বাস পড়ছে শীর্ণ, রোগা শরীরটিকে বাঁচিয়ে রাখবার জন্য, কিন্তু অসম্ভব বলিষ্ঠ মনের জোর নিশ্চই, নাহলে এই প্রবল যাতনা নিয়েও লোকটি এরকম শান্তভাবে শুয়ে থাকতে পারে কি করে? খানিকক্ষণ গিবস তাকিয়ে থাকলেন তার আধবোঁজা চোখের দিকে, তারপর সাহস করে ডাকলেন-

 

-“খুয়াম!”

 

নিজের নাম শুনে তার দিকে ধীরে ধীরে মাথা ঘোরালেন প্রৌঢ় ভিয়েতনামি যোদ্ধাটি।

 

-“আমার নাম সার্জেন্ট-”

 

-“ফিলিপ এডুইন গিবস! আমি চিনি আপনাকে। দুসপ্তাহ ধরে আমরা তীক্ষ্ণ নজর রেখেছিলাম আপনার ইউনিটের গতিবিধির ওপর!”

 

এই কথা বলে প্যান্টের ডানদিকের পকেটে হাত ঢুকিয়ে একটি পুরোন ছবি বের করে আনেন খুয়াম; কাঁপা-কাঁপা হাতে তার দিকে ছবিটি বাড়িয়ে ধরেন খুয়াম। সেটিকে হাতে নিয়ে দেখেন গিবস- তাদের ইউনিটের মার্চ চলাকালীন স্ন্যাপ করা একটি ছবি।

 

-“তোমাদের পরিকল্পনাটি বল। ‘অস্ত্রবিরতি’ সত্ত্বেও তোমরা হঠাৎ ফিরতি-আক্রমণ শুরু করলে কেন?”

 

একটা স্মিতহাস্য হাসলেন খুয়াম; কিছুটা দমকা কাশি বেরিয়ে এল তার মুখ দিয়ে, সামলে উঠে তিনি বললেন-

 

-“আপনারা উন্নত দেশের উন্নত জনজাতির সভ্য মানুষেরা আমাদের দেশে অস্ত্র, বিমান আর ট্যাঙ্ক নিয়ে ঢুকে যা ইচ্ছে তাই করবেন, আর আমরা একটি থালায় আমাদের দেশকে তুলে ডালির মত সাজিয়ে আপনাদের হাতে তুলে দেব- এতটা সৌজন্যতা আশা করা উচিৎ নয়, সার্জ!”

 

চুপ করে গেলেন সার্জেন্ট গিবস। ড্রিফটিং-এর আগে তিনি ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন, অধ্যাপনা করতেন; একেবারে জন্মগত ‘ব্রাস-হেলমেট’ তিনি নন! কোথাও গিয়ে খুয়ামের বক্তব্যের সঙ্গে তিনি সহমত হলেন। কিন্তু…ভাবালুতার সময় এটি নয়; যা করবার তাড়াতাড়ি করতে হবে-

 

-“তিনদিন ধরে আমাদের ওপর এই ক্রমাগত আক্রমণের পিছনে কারণ কি? কত প্রাণ চলে গেল-”

 

এই প্রশ্নে হঠাৎ বড় বড় হয়ে এল খুয়ামের চোখ, একটি লম্বা শ্বাস টানলেন তিনি, তারপর একটু চুপ থেকে শক্তিসঞ্চয় করে নিয়ে গিবসের দিকে তাকিয়ে খুয়াম বললেন-

 

-“আমার সময় ফুরিয়ে এসেছে সার্জ…আমার তিনকুলে কেউ নেই, বন্ধুরাও আমায় ফেলে পালিয়েছে…আপনাকে একটি জিনিষ দিয়ে যাব, রাখবেন? অনুগ্রহ করে আমার ডানপায়ের জুতোটা খুলে আমায় একটু দিন-”

 

এই অদ্ভুত অনুরোধে একটু অবাক হয়ে গেলেন গিবস; ব্যাপারটা বিপজ্জনক হতে পারে, জুতোয় কোন অস্ত্র লুকিয়ে রাখা নেই তো? দোনামোনা করে শেষে খুয়ামের জুতোটি খুললেন গিবস, তারপর তা ধরিয়ে দিলেন খুয়ামের হাতে।

 

সেটি নিয়ে একটি অদ্ভুত কাণ্ড করলেন খুয়াম! জুতোর গোড়ালি ধরে হালকা একটু চাপ দিতেই পাশের একটি অংশ ডালার মত খুলে গেল, এরপর সেখানে হাত গলিয়ে একটি মাঝারি আকারের অদ্ভুত চোখ আকৃতির একটি বস্তুকে বের করে আনলেন তিনি। প্যাগোডায় স্মিত হয়ে আসা কৃত্রিম আলোয় একবার তিনি ঘুরিয়ে দেখলেন সেটিকে কিছুক্ষণ, তারপর তা তুলে দিলেন গিবসের হাতে।

 

-“কি এটি?”- জিজ্ঞেস করলেন গিবস। উত্তরে ঘন ঘন শ্বাস টানতে টানতে খুয়াম বললেন-

 

-“’পেইয়ুদু’ গ্রামে আমার বাড়ি, জায়গাটা উত্তর ভিয়েতনামে…আমরা ওখানে সম্ভ্রান্ত ও প্রাচীনতম বংশের সন্তান…এই চোখটি আমাদের কাছে দীর্ঘ সময় ধরে ছিল…আপনাদের লোকেরা আমাদের গ্রামটি ধ্বংস করবার আগে কোনমতে আমি এটিকে নিয়ে পালিয়ে আসি…অত্যন্ত প্রাচীন ও পবিত্র বস্তু এটি…জনশ্রুতি- আমাদের পূর্বপুরুষদের হাতে আসবার আগে যাদের কাছে এটি ছিল, তারা একে পবিত্র ইরাবতী নদীর জলে কুড়িয়ে পেয়ে দীর্ঘসময়ের জন্য নিজের কাছে রাখে…তারপর ওরা চলে আসে আমাদের দেশে…”

 

-“খুয়াম, খুয়াম! আপনি আমাদের ভুল পথে চালনা করছেন; আপনাদের পরবর্ত্তী পরিকল্পনা বলুন-”

 

-“এই মরণশীল খেলাটা থেকে বেরিয়ে আসুন সার্জ!”- প্রায় নিস্তেজ হয়ে আসছিলেন খুয়াম কথা বলতে বলতে, এখন গিবসের বাধাদানে অসহিষ্ণু হয়ে চাপা গলায় ঝাঁঝিয়ে উঠলেন তিনি- “সময়কে পিছনে ফেলে ঊর্দ্ধে উঠে এসেছে এই ‘চোখ’! পাহাড়ের কোলে সহস্রাব্দ প্রাচীন ‘কলস’ জাতি…তারই ধারে-কাছে কোথাও তিন বোন খেলা করছে…এক বোন কাঁদছে…তার একচোখে সরু অশ্রুজলের ধারা…সেখানেই পাবেন সেই দরজা…দুটি চাবি একসাথে জুড়ে গেলে ভেঙে যাবে সময়ের ভেদ, খুলে যাবে বন্ধ দুয়ার-”

 

প্রলাপ বকছেন খুয়াম, আসন্ন মৃত্যুর ছায়া ঘনিয়ে এসেছে তার চোখে-মুখে! কিন্তু…কিছু একটা রহস্য ছিল তার প্রলাপের মধ্যে, গিবস বাধ্য হলেন একবার চোখ নামিয়ে তার হাতে ধরা অদ্ভুত বস্তুটির দিকে তাকাতে। এটা কি কোন চাবি? কিন্তু কোন দরজার চাবি এটি? কোথায় সে দরজা? আর কি অদ্ভুত গড়ণ এই চাবির! মানুষের বাঁ-চোখের মত দেখতে অনেকটা, হালকা, কিন্তু অত্যন্ত সুদৃঢ় কোন ধাতব বস্তু দিয়ে তৈরি এই চাবি, এর সারা গায়ে আবার বেশ বাহারি নকশাকাটা! প্রাচীন শিল্পকলার এক অপূর্ব নিদর্শন, আর চাবিটিও দেখে মনে হচ্ছে অনেক প্রাচীন। কৌতুহলে চাবিটিকে আলোর দিকে ফেরালেন গিবস- অতি পরিচিত অপর একটি প্রাচীন বস্তুর সঙ্গে এর গঠনগত একটি সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না?

 

-“খুয়াম, এটি কি ‘আই অফ্ হোরা’-”

 

খুয়ামের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটি করতে যাচ্ছিলেন গিবস, কিন্তু মুখ ঘুরিয়ে বুঝলেন- তার আর দরকার নেই; কোন প্রশ্নেরই উত্তর আর দেবেন না খুয়াম, সমস্ত জাগতিক প্রশ্নের ঊর্দ্ধে চলে গিয়েছেন তিনি! চোখ খোলা রেখেই প্রয়াত হয়েছেন খুয়াম, তার হিমশীতল চোখদুটি এখন স্থিরভাবে নিবদ্ধ গিবসের দিকে; একরাশ প্রত্যাশা আর আবেগ জড়িয়ে সেই চোখে। খানিকক্ষণ নরমভাবে সেই চোখের দিকে তাকিয়ে রইলেন গিবস, তারপর নিজের হাত দিয়ে সেই খোলা চোখের পাতাদুটিকে বন্ধ করে দিয়ে ভগ্নপ্রায় প্যাগোডার থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি। হাতে ধরা মানুষের চোখের মত আকৃতির সেই অদ্ভুত চাবি, তার সদ্যপ্রয়াত মালিক তখন চিরঘুমে আচ্ছন্ন দেবতার উদ্দেশ্যে সমর্পণ করা ভগ্নপ্রায় প্যাগোডার ভিতর।

 

-“‘কলস’ জাতি…তিন বোন যেখানে খেলা করে…এক বোনের চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসে অশ্রুধারা…দরজা…মন্দির…মানে কি এই কথাগুলির? মৃত্যুকালীন বিকার, না বাস্তব?”

 

নিজের মনে স্বগতোক্তি করলেন গিবসন, চোখের সামনে হাতে ধরা চাবিটিকে তুলে ধরে। মিশরীয় ‘আই অফ্ হোরাস’-এর সঙ্গে বহুলাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ এই স্থাপত্যটি ততক্ষণে একরাশ প্রশ্ন মেলে ধরেছে তার মনে; এর উত্তর তাকে পেতেই হবে!

Our books: https://play.google.com/store/books/author?id=Aritra+Das
Our twitter account: https://twitter.com/aritradas1982

This is a pure imaginative, science fiction, original story-line based upon imagination. Any similarity with reality is a definite coincidence.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The Legacy of Ram: Prologue- Part4 (দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪)- A mystery, post-apocalyptic fiction Bengali Novel series by Aritra Das

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (The Legacy of Ram- Prologue):  অধ্যায়৪  ( PART4 ) - A Bengali science fiction, mystery, suspense thriller and post-apocalyptic fiction novel series by Aritra Das, the Bengali writer   The Legacy of Ram: Prologue (আদি পর্ব) Part4 [দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (প্রলগ) গল্পটির প্রথম তিনটি পর্ব প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে, পেজে গল্পের শেষে অন্যান্য লিঙ্কগুলি পাওয়া যাবে। অবশ্যই পড়বেন] দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪ অধ্যায়৩ থেকে শেষের কিছুটা অংশ- -“অভিযুক্ত… দ্যূহ… অভিযুক্ত… দ্যূহ… দ্যূহ…” একটি কথাই পর্যায়ক্রমে উচ্চারণ করে চলেছে ‘মদন’! অস্পষ্টভাবে ‘ব্যূহ’ কথাটি মহর্ষির কানে শোনাল ‘দ্যূহ’। কিন্তু সেদিকে তখন মন নেই তাঁর, তিনি শুধু বিস্মিত এই ভেবে যে এই আদিম মানব দম্পতি তা হলে কথা বলতেও সক্ষম! তিনি আবিষ্ট হয়ে তাকিয়েই থাকলেন তাদের দিকে। -“বিচারকরা সকলেই আপনার জন্য অপেক্ষমান, মহর্ষি! চলুন, আর বেশি দেরি করা উচিৎ হবে না। আমি উপযাচক হয়ে এগিয়ে এসেছিলাম আপনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আসুন।” -“আমাকে পথ দেখান, ভগবান!”   মাথা নী...

What is the story-plot of the series? A Summery from the Writer's End of the Series of The Legacy of Ram- A Bengali science fiction action-adventure and Suspense novel by Aritra Das, the Author

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- নিঃসঙ্গ যাত্রার সূচনা - গল্পের প্লট ও এই প্রসঙ্গে কিছু কথা আপনাদের সাথে - © অরিত্র দাস Discussing the plot of The Legacy of Ram by Aritra Das এর আগের ব্লগটিতে আলোচনা করা হয়েছিল মূলতঃ ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটির চরিত্রগুলির নামকরণ নিয়ে বিশদে। এই ব্লগে আমি গল্পটির প্লট নিয়ে দু-চার কথা আলোচনা করব; তবে আলোচনা যত দীর্ঘই হোক না কেন, যা বলব তার থেকে বাকি থেকে যাবে অনেক বেশি! এতটা দীর্ঘ, জটিল, বিভিন্ন তত্ত্ব ও প্রাচীন সভ্যতাগুলিকে ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনাবহুল উপন্যাস এই ‘লেগ্যাসি’ পর্বটি যে একে একটি সীমিত ক্ষেত্রে বেঁধে রাখা খুবই কষ্টসাধ্য কাজ!   এই প্রসঙ্গে প্রথমেই যে কথাটি স্বীকার করে নেওয়া ভাল তা হল- আমি মহাকাব্যের একটি অন্ধ অনুকরণ গড়ে তুলতে চাই নি!   এই ছোট্ট কথাটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে অনেকগুলি কথা চলে আসে মনে, কিন্তু সেই সব কথার পুরোটা এই একটি ব্লগের মধ্যে লিখে ফেলা সম্ভব নয় (যেমনটা প্রথমেই উল্লেখ করেছি), তাই আমি যা লিখব, তা হবে আমার সেই চিন্তাধারার একটি নির্যাস মাত্র, পুরো বিষয়টি কিন্তু নয়।   আরও একটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন, ‘লেজেণ্ড’ বা ‘লেগ্যাসি’- কোনট...