সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

The Legacy of Ram: Prologue- Part4 (দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪)- A mystery, post-apocalyptic fiction Bengali Novel series by Aritra Das

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (The Legacy of Ram- Prologue):  অধ্যায়৪  ( PART4 ) - A Bengali science fiction, mystery, suspense thriller and post-apocalyptic fiction novel series by Aritra Das, the Bengali writer   The Legacy of Ram: Prologue (আদি পর্ব) Part4 [দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (প্রলগ) গল্পটির প্রথম তিনটি পর্ব প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে, পেজে গল্পের শেষে অন্যান্য লিঙ্কগুলি পাওয়া যাবে। অবশ্যই পড়বেন] দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪ অধ্যায়৩ থেকে শেষের কিছুটা অংশ- -“অভিযুক্ত… দ্যূহ… অভিযুক্ত… দ্যূহ… দ্যূহ…” একটি কথাই পর্যায়ক্রমে উচ্চারণ করে চলেছে ‘মদন’! অস্পষ্টভাবে ‘ব্যূহ’ কথাটি মহর্ষির কানে শোনাল ‘দ্যূহ’। কিন্তু সেদিকে তখন মন নেই তাঁর, তিনি শুধু বিস্মিত এই ভেবে যে এই আদিম মানব দম্পতি তা হলে কথা বলতেও সক্ষম! তিনি আবিষ্ট হয়ে তাকিয়েই থাকলেন তাদের দিকে। -“বিচারকরা সকলেই আপনার জন্য অপেক্ষমান, মহর্ষি! চলুন, আর বেশি দেরি করা উচিৎ হবে না। আমি উপযাচক হয়ে এগিয়ে এসেছিলাম আপনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আসুন।” -“আমাকে পথ দেখান, ভগবান!”   মাথা নীচু করে ভগবান শ্রীবি

বহুযুগের ওপার হতে-পর্ব ১০ | Bangla Historical Suspense audio story |Arit...

বহুযুগের ওপার হতে- পর্ব ১০ | Bangla Historical Suspense audio story |Aritra Das|Science Fiction novel




Bahujuger opaar hote is a Bengali science fiction, suspense-thriller audio story. This is a Bangla fiction novel, the story tells about an ancient time travelling design of the Gods which needs to be activated in our time...and the way it was activated! A must-see web series which breaks the story-line in many time frames.

Background music source: YOUTUBE LIBRARY
বহুযুগের ওপার হতে- পর্ব ৯ Video here: https://youtu.be/0L3_b5cT1uQ

VISIT US AGAIN

তাহলে এবার মূল গল্পে আসা যাক? বিদেশী অভিযাত্রীদের একটি ছোট দল ভারতে এসেছেন কোন একটি খোঁজে, আর এই অভিযাত্রী দলটিকে পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে ঘুরিয়ে আনার দায়িত্ব পড়েছে অগস্ত্যের ওপর। কে এই অগস্ত্য? জানবার জন্য অবশ্যই দেখুন বহু যুগের ওপার হতে ধারাবাহিকটির দশম পর্ব।

আজকের পঠিত অংশ: 

আরামদায়ক উষ্ণ আবহাওয়ায় হিমেল ঠাণ্ডার পরশ গায়ে মেখে একটা কম্বল জড়িয়ে জানলার ধারে ঠেস দিয়ে বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তা নিজেও টের পান নি অগস্ত্য; এখন ঘুমের মধ্যে এই অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে আচমকা ঘুম ভেঙে গেল তার।

 

বহুযুগ পর আবার ফেরৎ এল স্বপ্নটা; মধ্যিখানে এর রেশটুকু পর্যন্ত মিলিয়ে গিয়েছিল মাথা থেকে। অদ্ভুত আকৃতিবিশিষ্ট একটি পাহাড়, যার সঙ্গে আকৃতিগত সাদৃশ্য আঙ্কোরভাটের ঘন্টার মত আকৃতিবিশিষ্ট মন্দিরগুলির সঙ্গে! স্বপ্নে এই পাহাড়ে প্রবেশ করে এক দীর্ঘদেহী, বিরাট লম্বা এক পুরুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে তার। বিরাট লম্বা এই পুরুষটির দেহ দেখা যাচ্ছে না, সর্বাঙ্গ কুয়াশায় আবৃত হয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে বিশেষ একটি কোণে তর্জ্জনী নির্দেশ করছেন তিনি। সেদিকে মুখ ঘোরালেই দেখা যাচ্ছে একটি তোরণ, শুধুই একটি তোরণ, যার আগাপাশতলায় কোথাও কোন গাঁথনি নেই!

এই স্বপ্নটা দেখলেই একটি অস্বস্তির মধ্যে ঘুম ভাঙে অগস্ত্যর। স্বপ্নটি এতটাই সত্যি, এতটাই জীবন্ত বলে মনে হয় যে ঘুম ভাঙবার বেশ কিছুক্ষণ পরেও চাপা একটি আতঙ্কের রেশ কাজ করে তার মধ্যে। ছোটবেলায় অনেকসময় ঘুম ভেঙে উঠে কেঁদে ফেলতেন তিনি, পরবর্ত্তীকালে ব্যাপারটা তার গা সওয়া হয়ে যায়। মধ্যিখানে দীর্ঘদিন তো এই স্বপ্ন আর তাড়া করে ফেরে নি তাকে; বহুদিন পর আজ আবার প্রথমবার ফিরে এল সেই স্বপ্ন। কিন্তু, হঠাৎ?

 

কম্বলটা ভালো করে জড়িয়ে নিয়ে রেস্ট হাউসের জানলা দিয়ে বাইরের বরফে ঢাকা রাস্তার দিকে তাকিয়ে মনটা উদাস হয়ে গিয়েছিল অগস্ত্যর, একমনে কিছু একটা চিন্তা করছিলেন তিনি, এমন সময় দরজায় নকের আওয়াজ হতে ‘কাম ইন’ বলাতে দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলেন লুইসি, দুহাতে দুটি কফি-ভর্ত্তি মগ নিয়ে। একটা অগস্ত্যর সামনের টেবিলে রেখে ভোরবেলার মিষ্টি হাসি হেসে ‘গুড মর্নিং’ বললেন তিনি, উত্তরে একটি সুন্দর হাসি হেসে প্রতি-সম্ভাষণ জানালেন অগস্ত্যও।

 

-“ঘুম ঠিক হয়েছে তো?”- কফি খেতে খেতে বললেন লুইসি; উত্তরে ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বলাতে এবারে শুরু হল হালকা কথাবার্ত্তা; একথা-সেকথার পর বেশ কিছুক্ষণ বাদে কথাপ্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন লুইসি-

 

-“অগুস্টা, একা কথা জিজ্ঞেস করব, কিছু মনে করবেন না তো?”

 

তার নামের এই অসংশোধিত উচ্চারণ এখন অনেকটাই গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে অগস্ত্যর; এখন আর তার কোন অসুবিধাই হয় না এরকম একটি অদ্ভুত নামে সাড়া দিতে। ফরাসি এই মহিলাটির পক্ষে কোনমতেই সম্ভব নয় এর থেকে পরিষ্কার উচ্চারণে তাকে ডাকা। নীরবে প্রশ্নবোধক চোখ মেলে তিনি তাকিয়ে রইলেন লুইসির মুখের দিকে।

 

-“আসলে জোয়ানার মনে গতকাল একটি প্রশ্নের উদয় হয়…আমরা অবিশ্বাস করছি না আপনাকে, মিঃ ভার্গব যখন স্বয়ং পাঠিয়েছেন আপনাকে তখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আপনার ওপর অগাধ আস্থা তাঁর, কিন্তু…”

 

-“প্রশ্নটা বলুন!”- স্মিত হাস্যে বললেন অগস্ত্য। তিনি জানেন, বিদেশ-বিভুঁইয়ে এসে কতটা কঠিন কারোর ওপরে বিশ্বাস রেখে চলা; কিছু মনে করলেন না তিনি লুইসির এ হেন আচরণে। অগস্ত্যর কথায় মুখ নীচু করে কি ভাবলেন লুইসি, তারপর নিজের মোবাইল ঘেঁটে ভারতের উত্তরাঞ্চলের একটি বর্ধিত ম্যাপ বের করে বললেন-

 

-“আচ্ছা, ‘কলস’ গ্রামগুলির তো থাকার কথা এই অঞ্চলে, আমরা এখন যেখানে আছি সেখান থেকে অনেকটাই উত্তর-পশ্চিমদিকে, তাহলে আমরা আমাদের গন্তব্য থেকে এতটা সরে এলাম কেন তা ঠিক বুঝতে-”

 

অগস্ত্যর কফিপান হয়ে গিয়েছিল; তিনি কফি-মগটিকে সরিয়ে রাখলেন একদিকে, তারপর লুইসির অনুমতিক্রমে মোবাইলটি সামনের টেবিলে রেখে বলতে লাগলেন-

 

-“এখানে অনেক কিছু বোঝবার আছে লুইসি, আপনি ধৈর্য্য ধরে আমার কথা শুনুন।

 

এখানে দেখুন, ম্যাপে এই জায়গাটি হল ‘গিলগট’ প্রদেশ। এই জায়গাটি ধরে আপনি যদি সোজা একটি সরলরেখা ধরে এগিয়ে যান, তাহলে এই হল ‘কলস ভ্যালি’ যা ‘চিত্রল’ জেলার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। এই তামাম উপত্যকা অঞ্চলটি স্থানীয় লোকজনের কাছে ‘কাফিরিস্থান’ নামে পরিচিত। এখানে প্রকৃতি ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ, ভূমি সাংঘাতিক উঁচু-নীচু, বিপদ যেকোন দিক দিয়ে আসতে পারে। তবে মূল বিপদের কারণ অন্যত্র- দুটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

 

প্রথমেই বলে রাখি, যে ‘কলস’ জাতির কাছে আমরা পৌঁছতে চেষ্টা করছি তাদের তিনটি গ্রাম এই ‘কলস’ উপত্যকার মধ্যেই পড়ে যাচ্ছে। জায়গাটিকে ‘কাফিরিস্থান’ বলা হয়, কারণ এই জনজাতি যে ধর্ম মেনে চলে, মনে করা হয় যে সেটি হিন্দুধর্মের বহু প্রাচীন আচার-ব্যবহারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই জায়গাটির লেজের কাছটি আবার স্পর্শ করেছে আফগানিস্তানের একটি অংশকে, ফলে অনেক সময় তালিবানিরাও ঢুকে পড়ে এই অঞ্চলে। অত্যাচার চালায়, মারধোর করে। তবে সবকিছু সয়েও এরা এখনও টিঁকিয়ে রেখেছে নিজেদের অস্তিত্বকে।

 

আরও একটি সমস্যা এখানে পৌঁছনোর; ম্যাপে এই যে জায়গাগুলি দেখতে পাচ্ছেন, এই যে গিলগট, চিত্রল…এই জায়গাগুলি কিন্তু কোনটাই আমাদের ভূখণ্ড নয়। এগুলি বর্তমানে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত। বুঝতেই পারছেন- বর্তমান রাজনৈতিক আবহে পাকিস্তান সরকার কোনমতেই অনুমতি দেবে না এখানে কোন ভারতীয় নাগরিককে প্রবেশ করতে। তবে আরও একটি গুরুতর কারণ আছে এখানে না যাওয়ার পিছনে।

 

আপনাদের এখানে নিয়ে আসবার আগে ভার্গবকাকার সঙ্গে আমার একটি দীর্ঘমেয়াদী আলোচনা হয়; দীর্ঘ আলাপচারীতার শেষে আমরা দুজনই একমত হই- যে ‘কলস’ জাতির খোঁজ আপনারা করছেন তা কখনোই আপনি ‘কলস উপত্যকা’ য় পেতে পারেন না; কারণ এই ক্ষেত্রটি এই জনগোষ্ঠীর আদিম বিচরণস্থান ছিল না। ওরা ওদের উৎপত্তিস্থল থেকে সরে এসেছিল এখানে মাত্র তিন-চারশ, কি পাঁচশ বছর আগে। ওদের উৎপত্তি কোথায় তা জানতে অনেক অনুসন্ধান করতে হয় ভার্গবকাকাকে। এ.এস.আই.য়ে কাজ করবার সুবাদে প্রাচীন প্রমাণগুলির ব্যাপারে তিনি জানতেন; নথিপত্র ঘেঁটে তিনিই আবিষ্কার করেন যে আমরা এখন যেখানে যাব বলে তৈরি হচ্ছি সেই ‘লেহ’ জেলার ‘চুচোট-আইয়োকমা’ গ্রামের কাছেই পাহাড়ের কোলে এদের জন্ম, ওখানে দীর্ঘদিন বসবাসের পর কোন কারণে ওরা সরে যায় ওদের বর্তমান অবস্থানে! তাই অনুসন্ধান যদি করতেই হয় তবে এখানেই এটি করা ভালো। ওখানে আপনি কিছু নাও পেতে পারেন।”

 

-“ইন্টারেস্টিং…আচ্ছা একটা ব্যাপার বলুন তো…চারদিক মুসলমান-অধ্যূষিত এই জনজাতির আচার-ব্যবহারে হঠাৎ ‘হিন্দু-প্রভাব’ চলে এল কি করে? এ তো সত্যিই অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয়, এটা কি করে সম্ভব হল?”

 

-“আমার ব্যক্তিগত ধারণা ওগুলি হিন্দু আচার-ব্যবহার নয় লুইসি…ওগুলি পুরোন গ্রীক সভ্যতার ধর্মীয় আচার-আচরণ, তার সঙ্গে আঞ্চলিক প্রভাব! আপনি ঐ জনগোষ্ঠীর ছবিগুলি দেখেছেন?”

 

-“‘কলস’ জাতির লোকজনের ছবি? হ্যাঁ। প্রথমবার ওদের দেখে আমি ভেবেছিলাম ইওরোপীয় পর্যটকরা ওখানে গিয়ে ওরকম সেজে বোধহয় ছবিগুলি তুলেছে; সত্যি বলতে কি প্রথমবার ঐ ছবিগুলি দেখে আমি একটু বিরক্তই হয়েছিলাম-”

 

-“আপনি শুধু নন, যেকোন আনকোরা চোখ প্রথমবার যখন ওদের ছবি দেখবে তখনই সেই মনে এরকম কোন ধারণার সৃষ্টি হবে। এর নেপথ্যে একটি কাহিনি আছে, যার দুটি ভাগ। প্রথম ভাগ সেই সময় যখন ককেশাস পর্বত থেকে একটি জনজাতি সমতলে নেমে এসে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গেল। একটি জনজাতি চলে গেল পশ্চিমে, সুদূর পশ্চিমে; সেখানে গিয়ে সৃষ্টি করল প্রাচীন ‘ইউনানি’ সভ্যতা, যা পরবর্ত্তীকালে ‘গ্রীকসভ্যতা’ নামে পরিচিত হয়। আর একটি জনজাতি চলে এল পূর্বদিকে। তারা আবার দুটি দলে ভেঙে গেল; দ্বিতীয় দলটি এসে পৌঁছল ভারতের উপকন্ঠে, এখানকার প্রাচীন, সুসংহত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করে সৃষ্টি করল ‘আর্যাবর্ত’! ফলে বোঝাই যাচ্ছে কোন একটি সূত্র ধরে গ্রীক ও আর্য- দুটি সভ্যতার ধর্মীয় আচার-আচরণে কোথাও একটি মিল ঠিকই রয়ে গিয়েছিল। দুটি ক্ষেত্রেই কিন্তু আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক প্রভাব পড়ে ধর্মাচরণের উন্নতিকরণ হয়। একটি উদাহরণ আমি মেলে ধরব- ‘আর্য দেব-দেবীদের সঙ্গে অনার্য টোটেমদের পূজো’! এই সংহতি একদিনে হয় নি।

 

এই গল্পের দ্বিতীয় ভাগ- ৩২৭খৃীষ্টপূর্বাব্দে আলেকজাণ্ডার দ্যা গ্রেট-এর ভারত আক্রমণ। তৎকালীন ভারত তখন বহুভাগে বিভক্ত। ভারতের মূল ভূখণ্ডে একটি বিরাট অংশের একচ্ছত্র অধিপতি ধনানন্দ। তার বিরুদ্ধ-শক্তি তখন একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী- যার নেতৃত্বে ‘কৌটিল্য’ নামক একজন ব্রাহ্মণসন্তান, আর পুরোধায় ‘চন্দ্রগুপ্ত’ বলে একজন অখ্যাত পুরুষ, যিনি নিজের পদবীধারণ করেন ‘মৌর্য’। জনশ্রুতি অনুযায়ী এই সিংহ-হৃদয় পুরুষের মা ‘মূরী’ ছিলেন নন্দ বংশের নিয়োগ করা পরিচারক, একজন রূপবতী দাসী; ধনানন্দের ঔরসে অবৈধ উপায়ে চন্দ্রগুপ্তের জন্ম হয়। জনরোষ ঠেকাবার জন্য গোপনে ধনানন্দ মা-ছেলেকে মারবার আদেশ দিলে মগধ থেকে মা তার সদ্যজাত সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান, শিশু চন্দ্রগুপ্তের পরবর্ত্তীকালে ঠাঁই হয় কৌটিল্যর আশ্রয়ে।”

 

জোয়ানাও কখন যেন এসে যোগ দিয়েছিলেন এই আলোচনাচক্রে; তিনি ও লুইসি- দুজনেই মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতে থাকেন অগস্ত্যর বিবৃতি-

 

-“ধনানন্দকে পরাস্ত করে মগধ সাম্রাজ্যের ওপর একাধিপত্য কায়েম করেন এই অখ্যাত রাজা, তাঁর স্থাপনা করা রাজবংশের নাম হয় ‘মৌর্য সাম্রাজ্য’। তাঁর বাহুবল ও কৌটিল্যের নীতি অনুযায়ী সাম্রাজ্য বর্ধিত হয়; আয়তনে এতটাই বড় হয়ে যায় এই রাজ্য যে ‘কলিঙ্গ’ বাদে অপর কোন সমকক্ষ রাজ্য তখন ভূ-ভারতে ছিল না। দাক্ষিণাত্য অবশ্য বরাবরই স্বতন্ত্র্য ছিল আর্যাবর্তের প্রভাব থেকে।

 

কিন্তু এই সময় মূলত গ্রীকরা চন্দ্রগুপ্তের মূল প্রতিদ্বন্ধী হয়ে ওঠে। আর্যাবর্তের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তখন গ্রীক প্রভাব ছিল। আলেকজাণ্ডার যাওয়ার সময় ‘সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড’ করে যান তাঁর এক সেনাপতি সেলুকাসকে; মূলতঃ তার সঙ্গেই যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয় চন্দ্রগুপ্তকে। দীর্ঘকালব্যাপী যুদ্ধের পর অবশেষে পরাজয় স্বীকার করেন সেলুকাস, সন্ধি হয় তাঁদের মধ্যে।

 

বুঝতেই পারছেন লুইসি, ‘কলস’ জাতির উৎপত্তি কিসের থেকে। এদের বিবাহ কিন্তু নিজেদের জনজাতির মধ্যেই হয়, খুব বেশি মিশ্রণের প্রভাব এখনও এদের মধ্যে আসে নি। ফলে এরা এখনও তাদের প্রাচীন পিতাদের বাহ্যিক ও সামাজিক বৈশিষ্টগুলি ধরে রেখেছে।”

 

-“আর একটি কথা, অগুস্টা…”- অগস্ত্যের কথা শেষ হতেই জিজ্ঞাসা করলেন লুইসি- “আপনি বলেছেন ধনানন্দ বকলমে চন্দ্রগুপ্তের পিতা, তিনি যুদ্ধে পরাস্ত হওয়ার পর কি ঘটল? চন্দ্রগুপ্ত কি তাকে বধ করেন?”

 

অগস্ত্য স্থিরভাবে কিছুক্ষণ তাকালেন লুইসির মুখের দিকে, তিনি বুঝতে পেরেছেন তার বক্তব্য।

 

-“আপনি জানতে চান চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য নিজের হাতে তাঁর পিতাকে বধ করেছিলেন কি না- ঠিক তো?”

 

ঘাড় নাড়লেন লুইসি ও জোয়ানা- দুজনেই। বোঝা গেল দুজনই সমানভাবে আগ্রহী মহারাজ ধনানন্দের পরিণতি কি হল তা জানতে।

 

 -“সমসাময়িক ইতিহাস বলে মহারাজ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তার পিতা তথা ভূতপূর্ব সম্রাট ধনানন্দকে ছেড়ে দিয়েছিলেন, রাজ্য থেকে নির্বাসিত করেছিলেন তাকে। কিন্তু জনশ্রুতি বলে- কৌটিল্য শত্রুর শেষ রাখেন নি, গোপন আততায়ী দিয়ে তিনিই নাকি বধ করিয়েছিলেন ধনানন্দকে!”

 

-“এও তো একপ্রকার পিতৃহত্যা! মহারাজ চন্দ্রগুপ্ত কি জানতেন না কৌটিল্যের এই পদক্ষেপ?”- সমস্বরে বলে ওঠেন দুজনই।

 

একথায় আচমকা চুপ হয়ে যান অগস্ত্য; খানিকক্ষণের জন্য চিন্তার সাগরে যেন ডুবে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর সম্বিৎ ফিরে পেয়ে তিনি বলে ওঠেন-

 

-“ভার্গবকাকা এখানকার আর্মি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে রেখেছেন; যাওয়ার সময় আমরা ওদের সঙ্গে দেখা করে প্রোটেকশন নিয়ে যাব। এখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির, তাই সঙ্গে গার্ডস রাখতে হবে। আপনারা তৈরি হন, এখন সাতটা বাজে, ঘন্টাখানেকের মধ্যে আমরা বেরিয়ে পড়ব।”

অগস্ত্যকে বিদায় জানিয়ে ঘর থেকে বেরোবার সময় আবার একবার ফিরে আসেন লুইসি; দরজাটা বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। সেইসময় একপলকের জন্য চোখে পড়ল- একটি পুরোন আমলের চশমা চোখের সামনে মেলে ধরে একদৃষ্টে তাকিয়ে অন্যমনষ্কের মত কি যেন ভাবছেন অগস্ত্য; চশমাটার একদিকের ডাঁটি ভাঙ্গা! মুখে আর কিছু বললেন না লুইসি, দরজাটা টেনে বন্ধ করে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালেন তিনি।


Watch the video till the end. SUBSCRIBE. If you liked the video then do COMMENT, LIKE, SHARE. Thanks.

Story, voice-over, Concept and Editing: Aritra Das
Graphics: Shri Biswanath Dey

Our books: https://play.google.com/store/books/author?id=Aritra+Das
Our twitter account: https://twitter.com/aritradas1982



This is a pure imaginative, science fiction, original story-line based upon imagination. Any similarity with reality is a definite coincidence.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The Legacy of Ram: Prologue- Part4 (দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪)- A mystery, post-apocalyptic fiction Bengali Novel series by Aritra Das

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (The Legacy of Ram- Prologue):  অধ্যায়৪  ( PART4 ) - A Bengali science fiction, mystery, suspense thriller and post-apocalyptic fiction novel series by Aritra Das, the Bengali writer   The Legacy of Ram: Prologue (আদি পর্ব) Part4 [দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- আদি পর্ব (প্রলগ) গল্পটির প্রথম তিনটি পর্ব প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে, পেজে গল্পের শেষে অন্যান্য লিঙ্কগুলি পাওয়া যাবে। অবশ্যই পড়বেন] দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: আদি পর্ব- অধ্যায়৪ অধ্যায়৩ থেকে শেষের কিছুটা অংশ- -“অভিযুক্ত… দ্যূহ… অভিযুক্ত… দ্যূহ… দ্যূহ…” একটি কথাই পর্যায়ক্রমে উচ্চারণ করে চলেছে ‘মদন’! অস্পষ্টভাবে ‘ব্যূহ’ কথাটি মহর্ষির কানে শোনাল ‘দ্যূহ’। কিন্তু সেদিকে তখন মন নেই তাঁর, তিনি শুধু বিস্মিত এই ভেবে যে এই আদিম মানব দম্পতি তা হলে কথা বলতেও সক্ষম! তিনি আবিষ্ট হয়ে তাকিয়েই থাকলেন তাদের দিকে। -“বিচারকরা সকলেই আপনার জন্য অপেক্ষমান, মহর্ষি! চলুন, আর বেশি দেরি করা উচিৎ হবে না। আমি উপযাচক হয়ে এগিয়ে এসেছিলাম আপনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আসুন।” -“আমাকে পথ দেখান, ভগবান!”   মাথা নীচু করে ভগবান শ্রীবি

What is the story-plot of the series? A Summery from the Writer's End of the Series of The Legacy of Ram- A Bengali science fiction action-adventure and Suspense novel by Aritra Das, the Author

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- নিঃসঙ্গ যাত্রার সূচনা - গল্পের প্লট ও এই প্রসঙ্গে কিছু কথা আপনাদের সাথে - © অরিত্র দাস Discussing the plot of The Legacy of Ram by Aritra Das এর আগের ব্লগটিতে আলোচনা করা হয়েছিল মূলতঃ ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটির চরিত্রগুলির নামকরণ নিয়ে বিশদে। এই ব্লগে আমি গল্পটির প্লট নিয়ে দু-চার কথা আলোচনা করব; তবে আলোচনা যত দীর্ঘই হোক না কেন, যা বলব তার থেকে বাকি থেকে যাবে অনেক বেশি! এতটা দীর্ঘ, জটিল, বিভিন্ন তত্ত্ব ও প্রাচীন সভ্যতাগুলিকে ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনাবহুল উপন্যাস এই ‘লেগ্যাসি’ পর্বটি যে একে একটি সীমিত ক্ষেত্রে বেঁধে রাখা খুবই কষ্টসাধ্য কাজ!   এই প্রসঙ্গে প্রথমেই যে কথাটি স্বীকার করে নেওয়া ভাল তা হল- আমি মহাকাব্যের একটি অন্ধ অনুকরণ গড়ে তুলতে চাই নি!   এই ছোট্ট কথাটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে অনেকগুলি কথা চলে আসে মনে, কিন্তু সেই সব কথার পুরোটা এই একটি ব্লগের মধ্যে লিখে ফেলা সম্ভব নয় (যেমনটা প্রথমেই উল্লেখ করেছি), তাই আমি যা লিখব, তা হবে আমার সেই চিন্তাধারার একটি নির্যাস মাত্র, পুরো বিষয়টি কিন্তু নয়।   আরও একটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন, ‘লেজেণ্ড’ বা ‘লেগ্যাসি’- কোনটিই কিন্তু কোন

A Confession from the Writer's End Part2 on the Series of The Legacy of Ram- A Bengali science fiction action-adventure and Suspense novel by Aritra Das, the Author

দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- নিঃসঙ্গ যাত্রার সূচনা প্রসঙ্গে দু-চার কথা পর্ব২- বিবিধ চরিত্রগুলির নামকরণ - © অরিত্র দাস On the new novel 'The Legacy of Ram' এর আগের আলোচনায় মোটামুটি ‘লেগ্যাসি’ পর্বটির মূল ধারাটি আপনাদের কাছে তুলে ধরেছিলাম; এই পর্বে আমি আলোচনা করব এই সমগ্রটিতে ব্যবহার করা নামগুলি প্রসঙ্গে। প্রসঙ্গক্রমে আপনাদের জানাই- মূল গল্পটি প্রাথমিকভাবে ভেবে রাখা হয়েছিল আগেই, কিন্তু ‘সলতে পাকানোর পর্বে’ এসে যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলায় পড়েছিলাম- চরিত্রগুলির নাম, ও সঙ্গতি মিলিয়ে আনুষঙ্গিক কিছু স্থান বা অন্যান্য বিষয়ের নামকরণ। একটু খোলসা করলে বিষয়টি আশা করি পরিষ্কার হবে।   যেমনটি আমি আগেও বলেছি- ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটিতে গল্প কিন্তু এগিয়ে চলেছে পৃথক, সমান্তরাল দুটি খাতে। এই দুটি খাত কখনোই একটি বিন্দুতে এসে মিলিত হতে পারে না, কারণ- এদের সময়কাল ভিন্ন। একটি খাত গন্ধর্বদের নিয়ে, আধুনিক মানব বিকাশের অনেক আগের সময় সেটি; এমন একটি সময়কাল যখন গন্ধর্বরা প্রযুক্তিগতভাবে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। কিন্তু- তাদের বিলাসিতা, জীবনের মূল্যবোধ সম্পর্কে পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গী এবং স্বজাতির প্রতি ভ্রান্ত নী