The Legend of Ram - Rise of a Species - Episode2 Part9
Watch out the Previous Part8 of the series here. If you are looking for a Bengali Audio story channel with fresh, new, original audio stories then you may have a try on us here!
The audio story to this part is down below at the bottom of this article.
A science-fiction Bengali audio book visual storyline based on ancient tales of India, by Aritra Das.
দানব-নিধন সম্পন্ন করে বিজয়ী বীরের মত রাজধানীতে প্রবেশ করেছেন আমাদের নায়করা। এখন দুইভাই উদগ্রীব তাঁদের পিতৃসাক্ষাতের জন্য। তাঁরা পুরষ্কার আশা করেছিলেন তাঁদের কৃতকর্মের জন্য, কিন্তু...এ কি পেলেন তাঁরা পরিবর্তে? জানতে গেলে চোখ রাখতেই হবে এই পর্বে।
Story, voice-over, Concept and Editing: Aritra Das
Graphics: Shri Biswanath Dey
Background music source: YouTube Audio Library
Story read in this part:
-“খবর কত দ্রুত ছড়ায় দেখেছিস মিতে?”
সদলবলে তাঁদের প্রত্যাবর্তনের আগেই কেমন করে যেন দানব-নিধনের
খবরটা পৌছে গিয়েছিল রাজধানীতে। সেখানে তখন তিলধারণের জায়গা নেই কোথাও! প্রত্যেকটি অট্টালিকার
ছাদ, তোরণ, ভবনের জানালাগুলি, বড় রাস্তার দুধারে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে অগুন্তি সাধারণ
গন্ধর্ব। প্রত্যেকেই দেখতে চান তাদের নায়কদেরকে, যাদের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বেঁচে
গিয়েছে বহু সম্পত্তি, আর অনেকগুলি প্রাণ।
অনুসরণরত জনতাকে রাজ-প্রাসাদের বাইরে রেখে অশ্বপৃষ্ঠ থেকে
নেমে আসলেন নায়কেরা। প্রত্যেকে হাত তুলে অভিবাদন করলেন উপস্থিত জনতাকে। অতঃপর, বাকি
সঙ্গীদের থেকে বিদায় নিয়ে পিতার সঙ্গে দেখা করতে চললেন বীরভদ্র ও সুমিত্রসেন; তাঁরা
জানতেন লোকমুখে দানব-নিধনের খবর পেয়ে মহারাজ বর্তমানে তাঁদের জন্য প্রতীক্ষারত। আর
দেরি না করে পিতৃসাক্ষাতের জন্য শশব্যস্ত হয়ে উঠলেন দুজনেই।
মহারাজ মহাসেনের কক্ষে ঢুকে দুই ভাই প্রণাম করলেন পিতাকে।
দুইহাত তুলে আশীর্বাদ করলেন মহাসেন, তাঁর সুযোগ্য দুই পুত্রকে।
-“তোমাদের দানব-সংহারের কীর্তি শুনলাম। অসাধারণ বুদ্ধি
ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দেখিয়েছ তোমরা সকলেই। তোমাদের এই কীর্তিতে তোমাদের পিতা যারপরনাই
আনন্দিত!”
দুই ভাইই অত্যন্ত খুশিয়াল হয়ে উঠল তাঁদের পিতার আনন্দ
অনুভব করে।
-“কিন্তু শুধু শারীরিক দিক দিয়ে বলশালী বা মানসিক দিক
দিয়ে বুদ্ধিমান হলেই যুদ্ধ জেতা যায় না –” থেমে থাকেননি মহাসেন, একটানা বলেই চললেন
তিনি – “তাঁর সঙ্গে দরকার আধুনিক যুদ্ধরীতির প্রয়োগ ও কষ্টসহিষ্ণুতার ক্ষমতা। কষ্টসহিষ্ণুতা
আর্ধেক যুদ্ধ জিতিয়ে দেয়, বাকি আর্ধেক নির্ভর করে যুদ্ধরীতির ওপর। তোমরা কি কষ্ট সহ্য
করবার মানসিকতা পোষণ কর?”
পিতার কথাটা ঠিক বোধগম্য হল না কারোরই। মহারাজা মহাসেনও
কথা কয়টি বলে আবার গিয়ে বসলেন তাঁর আসনে। ঘরে নেমে এল এক অস্বাভাবিক নিস্তব্ধতা।
দুইভাই তখনও কিংকর্ত্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে। দুজনেই এর-ওর
মুখের দিকে তাঁকাচ্ছেন কারণ কেউই এখনও কথাটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। পরবর্তী কর্মপন্থা
কি হওয়া উচিৎ তাঁরা যখন দাঁড়িয়ে সেইটাই চিন্তাভাবনা করছেন এমন সময় খুলে গেল ভিতরের
ঘরের দরজা। বেরিয়ে এলেন রাণী সুভদ্রা।
-“তোমাদের পিতা তোমাদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলতে সঙ্কোচ বোধ
করছেন বাপধনেরা! অগত্যা, আমিই বুঝিয়ে বলি। তোমাদের পিতাই কথাটা আমায় বলেছেন –”
-“না! আমি কখনোই দিই নি এই অন্যায় প্রস্তাব!” তীব্রস্বরে
মাথা ঝাঁকিয়ে প্রতিবাদ করে উঠলেন মহাসেন – “এই প্রস্তাবটি তোমার নিজস্ব উদ্ভাবনা। তুমিই
আবিষ্কর্তা এই বিতাড়ন তত্ত্বের!”
-“তোমাদের পিতা আমায় বলেছেন –” একটা তীব্র শ্লেষের দৃষ্টিতে
মহাসেনের দিকে কটাক্ষ করে বলতে শুরু করলেন সুভদ্রা – “বীরভদ্র! কঠোর কায়িক পরিশ্রমের
সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য তোমাকে বেশ কিছু কালের জন্য বনবাসে যেতে হবে। এটাই তোমার
পিতার সদিচ্ছা!”
বেশ কিছুটা সময় লাগল দুজনেরই কথাটা হজম করতে। আজ সকালেই
দানব নিধন করে এসেছেন তাঁরা। ভেবেছিলেন বাহবা পাবেন। কিন্তু তার পরিবর্তে, এ কি?
-“কতদিন সময় লাগবে এই অনুশীলন-এ?” কোনমতে ঢোঁক গিলে জিজ্ঞাসা
করলেন বীরভদ্র।
-“সঠিক সময়সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে একটা লম্বা
সময় লাগে বলে শুনেছি। সেটা গেলেই বোঝা যাবে।”
নীরব হয়ে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছেন বীরভদ্র; কিছু একটা
চিন্তা করছেন তিনি। নিস্তব্ধতা ছাড়া আর কিই বা তিনি দিতে পারেন এই মুহুর্তে?
অপরদিকে স্বভাব-প্রতিবাদী কন্ঠ সুমিত্রসেন তখন তীব্র শ্লেষের
সঙ্গে বিঁধে যাচ্ছেন পিতা মহাসেনকে।
-“বাবা, এ অন্যায়! বড়দাদা হিসেবে বীরভদ্র স্বয়ং সিংহাসনের
যোগ্য দাবীদার। তাঁকে সরিয়ে মেজদা বিক্রমকে সিংহাসনে বসাবার এ এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।
এ অন্যায়! অন্যায্য!!”
-“লক্ষণ!!” তীব্রস্বরে ডেকে উঠলেন সুভদ্রা।
-“ডাকবেন না ও নামে আমাকে! এই নাম বাবা আমায় দিয়েছিলেন
আদর করে; আমার জন্মের পর চারিদিকে যেসব শুভ লক্ষণগুলি দেখা দেয় সেগুলিকে স্মরণে রাখবার
জন্যই আমার এই নামকরণ। ঐ নামে বাবাই একমাত্র ডাকেন আমায়, আপনি ঐ নাম উচ্চারণ করবার
পক্ষেও অনুপযুক্ত!”
-“শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছ তুমি। কি ভেবেছ আমার নামে
যা খুশি তাই বলে যাবে?” হিসহিসিয়ে বলে উঠলেন সুভদ্রা।
-“যা বলেছি ঠিকই বলছি। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি – ভালো
খাবার, ভালো ফল, ভালো পুঁথি বা পোষাক – সবকিছুতেই যেন মেজদার অধিকার। বা সেজদার। বড়দা
আর আমি দুজনেই যেন ব্রাত্য। আর আজ বড় হওয়ার পর সিংহাসনের যোগ্য দাবীদার যখন বড়দা, নিজের
সন্তানের পথ পরিষ্কার করতে বড়দাকে একেবারে জঙ্গলে? ঐসময় তো অনেকরকম বিপদ ঘটে যেতে পারে,
উনি তো তখন বিপদসীমার একেবারে কেন্দ্রস্থলে! তখন কি হবে?”
জ্বলন্ত চোখ মেলে সুভদ্রা তাকিয়ে ছিলেন সুমিত্রসেনের দিকে।
অনেকগুলি অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাঁকে যার কোন ব্যাখ্যা তাঁর কাছে
নেই।
-“হাতজোড় করে বলছি বাবা, দাদাকে পাঠাবেন –”
-“থামো।” বলে উঠলেন মহাসেন। ঘরের মধ্যে একটা নৈস্তব্ধ্য
নেমে এল সঙ্গে সঙ্গে।
-“বীরভদ্রকে জঙ্গলে পাঠানো হচ্ছে বটে, কিন্তু সেটা খোলা
প্রকৃতির মধ্যে থাকতে নয়। তিনি যাচ্ছেন ব্রহ্মচর্যে। এখানকার প্রাথমিক অস্ত্রশিক্ষা
ও শাস্ত্রবিদ্যা তোমাদের শেখানো হয়েছে, তোমরা এই বলে বলীয়ান। কিন্তু আধুনিক বিশ্বের
সঙ্গে পরিচিত হতে হলে, রাজ্যকে সুরক্ষিত রাখতে হলে আধুনিক যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শিতা
একান্ত প্রয়োজনীয়। আধুনিক অস্ত্রের সঙ্গে পরিচিত হতেই হবে।”
-“কিন্তু তাই বলে একেবারে জঙ্গলে?”
-“আমার কথা এখনো শেষ হয় নি সুমিত্রসেন! বীরভদ্র যাচ্ছেন
মহর্ষি বিশ্বামিত্রের আশ্রমে। ওটি শুধু একটি নিছক আশ্রম নয়, দেবতাদের গুপ্ত নজরদারি
কেন্দ্র। ওখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই একমাত্র যেতে পারে এবং অনুমতি ব্যতিরেকে ওখানে
বা ওর ধারে-কাছে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। কাজেই বুনো জন্তু-জানোয়ারের তাণ্ডবে অপঘাতে মৃত্যু,
এ আশংকা অমূলক। তবে, আমি চেয়েছিলাম অস্ত্রশিক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পর বীরভদ্র আবার রাজ্যেই
ফেরৎ আসুক।” শেষ কথাটি রাণী সুভদ্রার দিকে তাঁকিয়ে কেটে কেটে বললেন মহাসেন।
-“বেশ আমি রাজি!”
বীরভদ্রের এতক্ষণ পর বলে ওঠা এই কথা কয়টি ঘরের ভিতরে এক
প্রবল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করল। সকলেই চমকে উঠলেন কথাটি শুনে। সব থেকে বেশি চমকালেন সুভদ্রা
– তিনি ভাবতেই পারেন নি বীরভদ্র এত সহজেই রাজি হয়ে যাবেন!
-“কিন্তু দাদা তুই বুঝতে পারছিস না এটা একটা চালাকি
–”আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন সুমিত্রসেন, তাঁকে মাঝপথে থামিয়ে দিলেন বীরভদ্র স্বয়ং; বললেন
–“বাবার সিদ্ধান্তের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তিনি
স্বয়ং যখন এই পরিকল্পনা নিয়েছেন তখন বুঝতে হবে কোথাও নিশ্চই কোন পরিকল্পনা কাজ করছে
যা আমরা জানি না, বা উপলব্ধি করতে পারছি না। কাজেই, পিতার পরিকল্পনায় সাড়া দেওয়াই পুত্র
হিসেবে আমার কর্তব্য। আমি যাব।”
-“বেশ। তাহলে আমারও একটি শর্ত আছে। আমিও যাব তোর সঙ্গে,
জঙ্গলে।” বলে উঠলেন সুমিত্রসেন।
এতক্ষণে একটু বিচলিত হলেন বীরভদ্র। জঙ্গলের জীবন যত আরামপ্রদই
মনে হোক, এটা কিন্তু মোটেও কোন আরামের জীবন নয়। এরকম একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে তিনি
নিজের ভাইকে নিয়ে যাবেন কোন সাহসে? তিনি তাঁর আশংকার কথা ব্যক্তও করলেন সুমিত্রসেনের
কাছে।প্রত্যত্তরে সুমিত্রসেন বললেন -
-“ভেবে দেখ দাদা, আমি সবসময় তোর আশেপাশেই বড় হয়েছি। আমার
বেড়ে ওঠা তোর হাত ধরেই। আজকে হুট করে আলাদা হয়ে যাওয়া, বিশেষ করে এ ষড়যন্ত্রময় পরিবেশে
–” সুভদ্রার দিকে অপাঙ্গে একবার তাকিয়ে দেখে আবার শুরু করলেন তিনি – “রাজপরিবারের এই
ষড়যন্ত্রময় পরিবেশে থাকলে বলি হয়ে যেতে পারি, সেক্ষেত্রে তোর কাছে সুরক্ষিত থাকব আমি।
জঙ্গলে আপদে-বিপদে তুই দেখবি আমায়, আমি দেখব তোকে। সেটা কি সম্ভব আমি এখানে থাকলে?
ভেবে দেখ একবার!”
-“ব্যাস! আর কোন কথা নয়!-” বলে উঠলেন মহাসেন –“অনুজ লক্ষণের
এই ভ্রাতৃত্ববোধ মুগ্ধ করেছে আমাকে। বেশ, তোমরা দুজনেই যাবে জঙ্গলে। কাল প্রাতে তোমরা
যাত্রা শুরু করবে তোমাদের নতুন জীবনের উদ্দেশ্যে। এখন এস।”
পিতৃপ্রণাম সেরে দুইভাই নিষ্ক্রান্ত হলেন মহারাজ মহাসেনের
কক্ষ থেকে।
-“তোমার আরাধ্য কার্য সম্পন্ন হয়েছে। সিংহাসনের যোগ্য
দাবীদার বীরভদ্র সিংহাসন থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অপসারিত। এখন যাও। আমাকে একা থাকতে
দাও।”
-“আমার পুত্র বিক্রমবাহুর রাজ্যপ্রাপ্তির ঘোষণাটাও আপনার
করে দেওয়া উচিৎ ছিল মহারাজ!”
-“ঠিক! কিন্তু উপরি পাওনা হিসেবে সুমিত্রসেনকেও তো জঙ্গলে
পাঠানো গেল যেটা তোমার হিসেবে ছিল না সুভদ্রা! সুমিত্রসেন… লক্ষণ! নিজের আদরের ছোট
ছেলেকে তাঁর ডাকনামে ডাকতেও আজ আমি কুন্ঠা বোধ করছি; এখন এস। আমাকে একা থাকতে দাও।
আমার অন্তর আজ অনুশোচনায় দগ্ধ!”
আর কোন কথা বাড়ালেন না সুভদ্রা; একটা ছোট প্রণাম সেরে
তিনিও বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে।
পরদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই রাজপ্রাসাদ ছেড়ে মহর্ষি বিশ্বামিত্রের
সাথে জঙ্গলের পথে এগিয়ে চললেন দুইভাই। পিছনে পড়ে রইল তাঁদের সাধের রাজপ্রাসাদ, রাজধানী।
==========================================================================
Our books
Our twitter account
My Pratilipi Profile; you may read my stories here. All the stories are written in Bengali
Stay updated for new stories and audio series announcements.
This is a pure fictional, science fiction story-line based upon self-imagination. Any similarity with reality is a definite coincidence.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমাদের ব্লগগুলি আপনাদের কেমন লাগছে? অবশ্যই জানান আমাদের-