The Legend of Ram-Rise of a Species- Episode2 Part6
Watch out the Previous Part5 of the series here. If you are looking for a Bengali Audio story channel with fresh, new, original audio stories then you may have a try on us here!
The audio story to this part is down below at the bottom of this article.
A science-fiction novel based on ancient tales of India.
শুরু হল দানব-নিধনের প্রস্তুতি। বাড়ির বড়দের চোখ এড়িয়ে বাড়ির ছোটরা এগিয়েচলেছেন দানব-সংহারে। কঠিন কাজ, কিন্তু আমাদের সাহসি যোদ্ধারা ভয় ও ভাবালুতাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। ছয়জনের একটি দল এগিয়ে চলেছে আরদ্ধ কার্যে, দানব-দর্শনের কোন প্রকার পূর্ব-অভিজ্ঞতা ছাড়াই। আর তারপরে যখন সত্যিই প্রথমবার দানব দেখলেন তাঁরা...তারপর কি হল? জানতে গেলে চোখ রাখতেই হবে এই পর্বে।
The story read in Part6:
এগিয়ে চলেছে ছোট অশ্বারোহী দলটি গন্তব্যের দিকে। সামনে
যে দুজন অশ্বারোহী রয়েছে তাদের দুজনের হাতে ধরা একটা শক্ত, মোটা কাছি। আচম্বিতে দানব
যদি সামনে পড়ে যায় তার জন্যই এই ব্যবস্থা। সে ক্ষেত্রে সামনের দুজন কাছি টেনে ধরে ঘোড়া
ছুটিয়ে দেবে দুদিক থেকে; বাকিরা বাধ্য করবে দানবকে সামনের দিকে ছুটে আসতে। কাছিটা এরপর
জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে দানবটির পায়ে; এতে দানবটা যখন মুখ থুবড়ে পড়বে তখন দুপাশ
থেকে অস্ত্রবর্ষণ করা হবে তার ওপর – মোটের ওপর এই হল পরিকল্পনা!
-“দানব আকারে কতটা বড় হয় রে দাদা?” জিজ্ঞেস করলেন সুমিত্রসেন।
-“তা বলতে পারব না রে মিতে, আমি তো কোনদিন দানব চোখে দেখি
নি, তবে শুনেছি আমাদের মাথার ওপর প্রায় চার-পাঁচ হাত লম্বা হয় এরা! অনেকটাই বড়।” উত্তর
দিলেন বীরভদ্র।
বোঝাই যাচ্ছে যে অশ্বারোহী দলটির কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই
দানব-দর্শনের!!
নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছে ঘোড়াগুলিকে একত্রে বেঁধে রাখলেন
সকলে। অতঃপর পায়ে হেঁটে সবাই মিলে যাত্রা শুরু করলেন সেখানে, যেখানে দানবটিকে শেষ দেখা
গিয়েছিল। জঙ্গলের এই অংশটির সঙ্গে কমবেশি সকলেই পরিচিত। জায়গাটি ভাল নয়; একটা বিরাট
বিস্তৃত চোরাবালি আছে এই স্থানটি বরাবর। সতর্ক হয়ে, নিশ্চুপ থেকে সকলে এগিয়ে চললেন
সামনের দিকে, প্রত্যেকের হাতে উদ্যত অস্ত্র।
কাঠুরেদের বর্ণনা করা জায়গাটিতে পৌছেও গেলেন তাঁরা একসময়।
তারপর একটু খোঁজাখুঁজির পর দানবটিকে আবিষ্কার করা গেল। একটা গাছের গুঁড়িতে ঠেস দিয়ে
বসে তখন ঘুমোচ্ছিল ওটি।
এবার চোখ ফুটল সকলের। দানব যে আকারে এত বড় হতে পারে তা
তাঁদের কল্পনার অধিক! বসা অবস্থাতেই দানবের মাথা গাছের প্রায় মাঝামাঝি চলে গিয়েছে;
গাছটাই বিশাল বড়, তাহলে দানবের উচ্চতা কত? আর তার গায়ের জোরই বা কত? বেশ খানিকটা দূরে
একটা মোটা গাছের গুঁড়ি পড়ে রয়েছে, পেছিয়ে এসে তার আড়ালে আশ্রয় নিয়ে বসলেন বীরভদ্রেরা
সকলেই।
-“তাই তো রে দাদা, এখন উপায়?” ফিসফিসয়ে জিজ্ঞাসা করলেন
সুমিত্রসেন।
সকলেই কেমন যেন থমকে গিয়েছে। দানবদর্শনের আগে তাঁদের মধ্যে
যে প্রাণচঞ্চলতা, যে উত্তেজনা কাজ করছিল, দানব-দর্শনের পর তা যেন আর নেই! সুধাকর তো
বলেই ফেলল যে ভাগ্য ভাল রাস্তায় জেগে থাকা অবস্থায় দানবটির মুখোমুখি পড়তে হয় নি, হলে
কেউ আর জীবন্ত ফেরৎ আসতে পারত না! এখন ঘরের ছেলে ঘরে ফেরৎ যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
বীরভদ্র অনেকক্ষণ ধরে কি একটা ভাবছিলেন। কয়েকবার ইতিউতি
চারিদিক তাকিয়ে দেখে নিলেন, যেন মেপে নিলেন কোনকিছু। তারপর তিনি মুখ খুললেন –
-“দানব-সংহার করা সম্ভব!”
প্রত্যেকে মুখ তুলে তাকালেন তাঁর দিকে। নতুন এক পরিকল্পনায়
যেন ঝকমকে হয়ে উঠেছে তাঁর মুখ!
-“দানবটিকে মারা যেতে পারে, কিন্তু বুদ্ধি প্রয়োগ করে।”
-“কিভাবে?” সকলেই প্রায় সমস্বরে একসঙ্গে প্রশ্ন করে উঠল।
-“দানবটি উচ্চতায় প্রায় আঠেরো হাত লম্বা। আর হ্যাঁ, শক্তিশালীও।
কিন্তু বুদ্ধির দিক থেকে এরা এখনও জান্তব প্রকৃতির। লম্বা প্রাণীদের একটা দূর্বল জায়গা
হাঁটু। আর, আমরা সকলেই জানি এখান থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে সেই বিখ্যাত চোরাবালি। কিছু
বোঝা গেল?”
বাকিরা সকলেই এর-ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে নিল একবার।
বোঝা গেল, অন্তত কেউই কিছু বোঝে নি! আবার তাঁর বক্তব্য শুরু করলেন বীরভদ্র –
-“যেকোন লম্বা প্রাণী, তাঁদের ভারসাম্য রক্ষা জিনিষটি
বেশ কষ্টকর। উচ্চতা বেশি হওয়া মানে হাঁটুর কাছে চাপের পরিমাণ বেশি। এই দানবকে টোপ দিয়ে
প্রথমে এই খোলা জায়গা থেকে বের করে আনতে হবে একটা অপেক্ষাকৃত বদ্ধ, সরু জায়গায় যেখানে
ওর স্বাধীন নড়াচড়াটি সীমিত হবে। জঙ্গলের একটু ঘন অংশে আসলেই এই সমস্যার সমাধান হতে
পারে। আমরা জানি এই স্থানের অদূরেই চোরাবালির অবস্থান ঠিক কোথায়। একে টেনে আনতে হবে
ঐ স্থলটিতেই। এরপর, দুইপাশের দুটি গাছ থেকে দুটি লম্বা শর মারতে হবে দানবের হাঁটু লক্ষ্য
করে। এই আচমকা আঘাতে দানবটির ভারসাম্য হারিয়ে যাবে, পদক্ষেপ হবে টালমাটাল। সতর্কতামূলক
ব্যবস্থা হিসেবে একই সঙ্গে একটি তৃতীয় শর ছুঁড়তে হবে আড়াআড়িভাবে একটি গাছকে লক্ষ্য
করে, তাতে বাঁধা থাকবে একটি মোটা কাছি, কাছি আর দানবের পদযুগল একই তলে থাকবে। ফলস্বরূপ,দানব
হুমড়ি খেয়ে পড়বে চোরাবালির ওপর। এরপর…কি হবে বলো তো?”
প্রত্যেকে খানিক্ষণ চুপ হয়ে গেল প্রস্তাবটা শুনে। এই গোটা
কার্যক্রমগুলির মধ্যে অনেকগুলি ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’কাজ করছে। তবে এটাও ঠিক অন্য কোন সাধারণ
দল হলে প্রথমেই এই প্রস্তাবটি খারিজ হয়ে যেত; কিন্তু যারা এই অভিযানে এসেছে তাঁরা প্রত্যেকেই
দুঃসাহসী বলে পরিচিত। কিছুক্ষণ চিন্তা করে প্রত্যেকেই রাজি হয়ে গেল এই প্রস্তাবে। তবে
‘যদি’ আর ‘কিন্তু’-র ব্যাপারগুলি সবাই পরিষ্কার করে নিল। উত্তর দিলেন বীরভদ্র।
-“যদি হাঁটু লক্ষ্য করে শর ছুঁড়তে না পারি?”
-“তাহলে এরপর মাথা লক্ষ্য করে ছুঁড়তে হবে!”
-“দানব যদি ঘুরে গিয়ে আমাদের সকলকেই আক্রমণ করে বসে?”
-“তাহলে দুটি পার্শ্বের আর পিছনদিকের লোকেরা ক্রমাগত শর
ছুঁড়ে দানবকে প্রতিহত করতে থাকবে।”
-“যদি দানব নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে আক্রমণ করে বসে?”
-“তাহলে সেই ব্যক্তি গাছের লতা ধরে ঝুলে চোরাবালির অপর
প্রান্তে পৌছানোর চেষ্টা করবে। সেই সুযোগে বাকিরাও একই পন্থা অবলম্বন করে চোরাবালির
অপর প্রান্তে পৌছাবে। চোরাবালির বিস্তৃতি অনেক বড়; ঘুরে অপর প্রান্ত দিয়ে আসতে আসতে
আমরা আমাদের অশ্বের কাছে পৌছে যাব। অতঃপর পালিয়ে আসতে কতক্ষণ?”
এই ব্যবস্থাটি প্রত্যেকেরই বেশ মনঃপূত হল। চোরাবালির যা
মাপ তাতে দানবের পক্ষে ডিঙিয়ে আসা সম্ভব নয়। তাকে ঘুরে আসতে হবে। সেই অবসরে সেখান থেকে
পালিয়ে আসা সম্ভব স্বচ্ছন্দে।
-“কিন্তু, টোপটা কে হবে?”
এই প্রশ্নের উত্তরে বীরভদ্র চকিৎে তাঁকালেন সুমিত্রসেনের
দিকে। তাঁকে অনুসরণ করে বাকিরাও। সকলকে তার দিকে তাকাতে দেখে কেমন যেন থতমত খেয়ে গেলেন
তিনি।
-“আমি?”
-“সব থেকে যোগ্যতম ব্যক্তি। ক্ষিপ্র, দুঃসাহসী; গাছ বাইতে
বিশেষভাবে পারদর্শী, দ্রুততম দৌড়বীর। ও ছাড়া অন্য কারোর মধ্যে সে দক্ষতা নেই।” বলে
উঠলেন বীরভদ্র।
-“কিন্তু আমি, মানে… কিভাবে…?”
[চলবে...]
-©অরিত্র দাস
=======================================================================
Our books
Our twitter account
Pratilipi Profile
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমাদের ব্লগগুলি আপনাদের কেমন লাগছে? অবশ্যই জানান আমাদের-