A Confession from the Writer's End Part2 on the Series of The Legacy of Ram- A Bengali science fiction action-adventure and Suspense novel by Aritra Das, the Author
দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম- নিঃসঙ্গ যাত্রার সূচনা প্রসঙ্গে দু-চার কথা
পর্ব২- বিবিধ চরিত্রগুলির নামকরণ
- © অরিত্র দাস
On the new novel 'The Legacy of Ram' |
এর আগের আলোচনায় মোটামুটি ‘লেগ্যাসি’ পর্বটির
মূল ধারাটি আপনাদের কাছে তুলে ধরেছিলাম; এই পর্বে আমি আলোচনা করব এই সমগ্রটিতে ব্যবহার
করা নামগুলি প্রসঙ্গে। প্রসঙ্গক্রমে আপনাদের জানাই- মূল গল্পটি প্রাথমিকভাবে ভেবে রাখা
হয়েছিল আগেই, কিন্তু ‘সলতে পাকানোর পর্বে’ এসে যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলায়
পড়েছিলাম- চরিত্রগুলির নাম, ও সঙ্গতি মিলিয়ে আনুষঙ্গিক কিছু স্থান বা অন্যান্য বিষয়ের
নামকরণ। একটু খোলসা করলে বিষয়টি আশা করি পরিষ্কার হবে।
যেমনটি আমি আগেও বলেছি- ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটিতে
গল্প কিন্তু এগিয়ে চলেছে পৃথক, সমান্তরাল দুটি খাতে। এই দুটি খাত কখনোই একটি বিন্দুতে
এসে মিলিত হতে পারে না, কারণ- এদের সময়কাল ভিন্ন। একটি খাত গন্ধর্বদের নিয়ে, আধুনিক
মানব বিকাশের অনেক আগের সময় সেটি; এমন একটি সময়কাল যখন গন্ধর্বরা প্রযুক্তিগতভাবে পৃথিবীর
সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। কিন্তু- তাদের বিলাসিতা, জীবনের মূল্যবোধ সম্পর্কে পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গী
এবং স্বজাতির প্রতি ভ্রান্ত নীতি অনুসরণ- মহান এই জনজাতিকে নিয়ে এসেছিল ধ্বংসের দোড়গোড়ায়,
বিনাশের আর কিছু মুহুর্ত্তই মাত্র বাকি! আর দ্বিতীয় খাতটি আধুনিক মানব বিকাশের অনেক
পরে, মানুষরা যখন সুসভ্য হয়ে ওঠে…মহর্ষি ব্যাসদেবের জীবনকালে। দুটি খাত তবে মিলবে কি
শর্তে?
ঠিক এখানেই সৃষ্টি হয়েছিল বিভ্রান্তির জায়গাটি। দুটি ভিন্ন সময়, দুটি ভিন্ন পরিবেশ। এদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অজস্র ঘটনা, পরিবেশ, চরিত্র, স্থান, বংশ। যারা পার্শ্বচরিত্র সমস্যা তাদের নিয়ে নয়, কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে তো সামঞ্জস্যবিধান তো করতেই হবে, নাকি? আগেই বলেছি- এই উপাখ্যানটির একটি বড় সমস্যা- প্রচুর চরিত্র, আর তাদের ঘিরে বিবিধ ঘটনা। তো দেখা যাক- নামকরণ বিষয়টি এখানে কিভাবে প্রভাব ফেলল-
আহীম কে? কি তার পরিচয়? কি হয়েছিল তার সাথে? জানতে গেলে চোখ রাখুন- 'মহাকালের মাঝে প্রথম পর্বে'
‘দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম’ গল্পের বিবিধ চরিত্রগুলির নামকরণ-
স্থায়ী
চরিত্রগুলির নামকরণ:
কয়েকজন চরিত্র এই উপাখ্যানে যে স্থায়ী থাকবেন
এই বিষয় তো ঠিকই ছিল। যেমন- মহর্ষি ব্যাসদেব, বা কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস। অসীম কীর্তিমান
ও প্রতিভাসম্পন্ন এই মানুষটি যে কীর্তিস্থাপন করে গিয়েছেন তা কালের সীমানা অতিক্রম
করে এখনও সমান প্রাসঙ্গিক! অপরদিকে ইনিই সেই ব্যক্তি, যিনি বেদকে চারটি সুষম ভাগে বিভক্ত
করার দুঃসাধ্য কর্মটি করেছিলেন! ওঁনার চার শিষ্য- পৈল, জৈমিনী, সুমন্ত ও বৈশম্পায়ন-
প্রত্যেকে ভিন্নভাবে ভিন্ন এক-একটি খণ্ডের ওপর ব্যূৎপত্তি লাভ করেন, কিন্তু ‘চারটি
বেদের ওপর জ্ঞান’ বিষয়টির ওপর দখল থাকে দুইজনার- পিতা ব্যাসদেব স্বয়ং, ও তাঁর পুত্র
শুকদেব; ইনি অবশ্য অত্যন্ত অল্প বয়সে মারা যান। শুকদেবের নামটি প্রসঙ্গক্রমে ভাসিয়ে
দেওয়া হল, কারণ ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটিতে এঁনার উপস্থিতি প্রচ্ছন্নভাবে একটি শুকপাখীর প্রতীকিরূপে
দেখানো হয়েছে। এই বিষয়টিতে পরে আসছি, আগে নামকরণের বিষয়গুলি বলে নিই।
মহর্ষি ব্যাসদেব ছাড়াও যে নামটি এখানে অক্ষুণ্ণ
রাখতে হয়েছে, তা হল- মহর্ষি মার্কণ্ডেয়। ‘লেজেণ্ড’ সমগ্রটির মতই, এখানেও কিন্তু তিনি
দুটি পৃথক সময়ের মধ্যে একমাত্র যোগসূত্র! দেবতাদের নির্দেশে কালভ্রমণে স্বচ্ছন্দে বিচরণে
সক্ষম এই ব্যক্তি আবার দ্বিতীয়বার এসেছেন মহর্ষি বাল্মীকির সময়সীমা থেকে অনেক দূরে,
মহর্ষি ব্যাসদেবের কাছে, আরও একটি নতুন মহাকাব্য নির্মাণের বায়না নিয়ে, যা অতীতে করা
গন্ধর্বদের ভুলগুলির থেকে শিক্ষা নিয়ে মানবপ্রজাতিকে সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে
পারে বলে তাঁর বিশ্বাস! এই সূত্রধরের নামটি অক্ষুণ্ণ রাখতে হল সঙ্গত কারণেই।
-“আপনাকে কোন বার্তা বহন করতে বলছি না, মহর্ষি
ব্যাস! এই তুচ্ছ কারণের জন্য আপনাকে বিব্রত করবার কোন কারণই নেই। আপনার দায়িত্ব আরও
বৃহত্তর, আরও ছড়ানো। আপনাকে গন্ধর্ব রাজপুত্রদের জীবন ও সংগ্রামের আংশিক প্রতিচ্ছবি
বলেছি, আরও বলব। আপনার অভিজ্ঞতা আছে কেমন লাগে যখন আত্মজরা একে একে বিদায় নেয় মরণশীলদের
জগৎ থেকে, কিরকম আঘাত লাগে যখন নিজের সৃজন করা আস্ত একটি বংশ শেষ হয়ে যায়। এই অভিজ্ঞতা
এবং আপনার অপরিসীম কল্পনা- এই দুইয়ের মিশ্রণে আপনাকে তৈরি করতে হবে একটি উপাখ্যান,
একটি মহাকাব্য, যা মানবপ্রজাতিকে বেঁধে রাখবে কঠোর মূল্যবোধে, বাঁচিয়ে রাখবে তাদের
মধ্যে মানবিকতা, যা তাদের কঠিন সময়গুলিতে উৎসাহ দেবে, উদ্দীপনা যোগাবে। যার মধ্যে সংকলিত
থাকবে সমস্ত ভুলগুলি, যার বাইরে নতুন করে কোন ভুল হবে না-”
কি হল 'ড্রাগনের মুখ থেকে আগুন চুরি করে আনা' জাদুবাবার শেষ পর্যন্ত? দুজনে পালাতে পারলেন কি পশ্চাদ্ধাবনকারী ঘাতকদের হাত থেকে? জানতে অবশ্যই দেখুন- 'মহাকালের মাঝে পর্ব২'
এইবারে আসা যাক অন্যান্য কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলিতে। এখানে মূল বিষয়টি একটু তলিয়ে ভাবতে হয়েছিল। দুটি পৃথক সময়তেই যে বিষয়টি এক তা হল- বেড়ার এপারে পাঁচ ভাগ্যাহত ভাইদের উপস্থিতি যারা নিজেদের হৃত সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করছেন, আর বেড়ার অপরদিকে বুক ঠুকে দাঁড়িয়ে ‘ডিফেণ্ডিং চ্যাম্পিয়ন’ ভাইয়েরা, এবং তাদের সহযোগী বয়ষ্কদের একটি দল (পেশাগত কারণেই হোক, বা সাম্রাজ্যের সুরক্ষার প্রতি কর্তব্যের টানে বয়ষ্ক ও অভিজ্ঞদের এই ভিড় চোখের সামনে ঘটে যাওয়া অন্যায়কে মেনে নিয়েও!)। যেহেতু দুটি ক্ষেত্রেই চরিত্রের সংখ্যা একই, তাই নিশ্চিতভাবেই ভিন্নভাবে এঁদের বোঝানোর জন্য পৃথক নামের প্রয়োজন কারণ নিশ্চিতভাবেই সমাপতন এতবার ঘটবে না যে চরিত্রগুলির নাম একই থাকবে! তাহলে এক্ষেত্রে উপায়?এখানে কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল বিকল্প নাম
ব্যবহারের, আর ঠিক সেই কাজটিই করতে হয়েছে আমায়। ক্লাসিকাল মহাকাব্যের দিকে হাত বাড়াতে
হল, আর তারপরই মাথায় এল উপায়। আচ্ছা, একই ব্যক্তির তো ভিন্ন ভিন্ন নামকরণ রয়েছে মহাকাব্যে,
তবে সেই নামগুলি প্রয়োগে সমস্যা কোথায়? খাতা-পেন্সিল টেনে নিয়ে ছকে ফেললাম নামকরণের
বিষয়টি, ফল দাঁড়াল-
যুধিষ্ঠির- অজাতশত্রু, ভীম- বৃকোদর, অর্জ্জুন-
পার্থ…ইত্যাদি। ব্যাস, এর পরে আর কি? গন্ধর্বদের ধারায় ব্যবহার করলাম এই নামগুলি, মানবদের
ধারায় অবশ্য চরিত্রগুলি পরিচিত হল নিজ নামেই। তবে নকুল-সহদেবের যে নামদুটি গন্ধর্ব
ধারায় ব্যবহার করেছি কথাপ্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি- এই নামগুলি মস্তিষ্কপ্রসূত। ভূদেব ও
বহ্লক কোন অবস্থাতেই তাঁদের অপর নাম ছিল না। মহর্ষি ব্যাসদেবের দাবী মেনে অবশ্য মূলধারার
মহাকাব্যে পাঁচ ভাই তাঁদের বহুলপ্রচলিত স্বনামেই পরিচিত হয়েছেন; এর পিছনে যে যুক্তিটি
ছিল-
-“…শুধু একটিই অনুরোধ- উপাখ্যানটি আবর্তিত হবে
যে পাঁচটি মূল চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে…মানে যেমনটা আমি ভেবে রেখেছি- এই পাঁচজনের নামকরণ
ও চারিত্রীক বিশেষত্বগুলি আমি গড়তে চাই আমার পাঁচ নাতভাইয়ের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে। বঞ্চণা
ও উপেক্ষাই আজীবন জুটেছে ওদের কপালে, তারই প্রায়শ্চিত্ত আমি করতে চাই আমার লেখনীর মধ্য
দিয়ে!”
- মহর্ষি ব্যাসদেব ও
মহর্ষি মার্কণ্ডেয়র মধ্যে কথোপকথন- দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম: নিঃসঙ্গ যাত্রার সূচনা
তবে কি নন্দীশ ঘুমের দেশে দেখতে পাচ্ছেন আহীমকে, অনুভব করতে পারছেন তার অস্তিত্ব, বহুযুগ পরের কোন এক ভিন্ন সময়ে বসে? 'মহাকালের মাঝে পর্ব৩'
দ্যুহ ও দেবব্রত
আরেকটি বিষয় ছিল- পিতামহ ভীষ্মের নামকরণ। গল্পের
মানব সভ্যতার যে শাখাটি রয়েছে তাতে ‘দেবব্রত’ নামটি ব্যবহার হয়েছে, কিন্তু গন্ধর্বদের
ধারাটিতে দেবব্রতের ‘অল্টার্ড ইমেজ’-এর নামকরণ হয়েছে দ্যুহ। প্রসঙ্গত, স্বর্গলোকের
দণ্ডপ্রাপ্ত অষ্টবসুদের শেষ বসুর নাম ছিল দ্যুহ, বাকি সাত ভাইয়ের মধ্যে এঁনার প্রাপ্ত
সাজার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল। কতটা বেশি, তা ‘ভীষ্ম’ চরিত্রটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফুটে
উঠেছে। নামকরণের সময় এই শেষ বসুর নাম উঠে এল মাথায়, কেন কে জানে?
আচার্য্য দ্রোণ ও ঋষি দেবদত্ত
লেগ্যাসি সমগ্রটিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
এই চরিত্রটির; বস্তুত ইনিই সামগ্রিকভাবে একই রাজবংশের দুইটি ভিন্ন শাখার ‘কমন’ শিক্ষাগুরু।
এবং অবশ্যই- মূল মহাকাব্য মেনে চরিত্রটির নাম আচার্য্য দ্রোণ। ‘দ্রোণ’ শব্দের অর্থ
‘কলস’। কথিত যে বালক দ্রোণকে পাওয়া গিয়েছিল একটি কলসের মধ্যে, তাই তাঁর এরকম অদ্ভুত
নামকরণ। রূপকের আশ্রয়টিকে যদি সরিয়ে নেওয়া হয়, তবে যে আধুনিক প্রযুক্তির আলোকে বিষয়টিকে
ভাবা যেতে পারে তা যথেষ্ট অর্থবহ; আর আধুনিক প্রযুক্তির বিষয়টি প্রাচীনকালে মানবদের
গোচরের মধ্যেও ছিল না। এই কারণে অতি স্বাভাবিক নিয়মেই আচার্য্য দ্রোণ নামটি রাখা হয়েছে
গন্ধর্বদের সময়ে, এঁনারই মানবসভ্যতায় ‘অল্টার্ড ইমেজ’ হিসেবে গল্পে উঠে এসেছেন ঋষি
দেবদত্ত। এঁনার ক্ষমতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মহর্ষি ব্যাসদেব বলেন-
-“উনি কে, তাই তো, পহ্লব? ওঁনার প্রথম পরিচয়-
উনি একজন ব্রাহ্মণ। ঠিক কবে থেকে সূর্যবংশ ব্রাহ্মণদের এরকম ন্যক্কারজনকভাবে অপমান
করা শুরু করেছে? না- কোন দোহাই নয়; সৌভাগ্যক্রমে তখন আমি আমার গৃহের উদ্দেশ্যে প্রত্যাবর্তন
করছিলাম, গোটা বিষয়টি আমি নিজে দেখেছি অন্তরালে থেকে। আর ওঁনার পেশাগত পরিচয়? না পাঠশাল,
না পৌরহিত্য; উনি একজন ক্ষত্রিয়-ব্রাহ্মণ! মানে জান? উনি আগে একজন যোদ্ধা, তারপরে একজন
ব্রাহ্মণ। এই যে হাতদুটি দেখছ, একবার ক্ষেপে উঠলে তোমাদের কারোর আজ আর নিস্তার ছিল
না! আর এই হাতে যদি ধনুক উঠত- ঈশ্বর ওঁনার শত্রুদের ক্ষমা করুন, কারণ নিশ্চিতভাবে উনি
করবেন না! পঁচিশ হাত দূর থেকে উড়ন্ত পতঙ্গকে মাঝামাঝি বিদীর্ণ করতে পারে ওঁনার ছোঁড়া
অব্যর্থ তীর, বুঝতে পারলে? তোমাদের মোটা খুলিতে ঢুকল কি, বিষয়টা?”
- দ্যা লেগ্যাসি অফ্
রাম- আদিপর্ব থেকে সংগৃহীত
স্বর্গের খোঁজে বেরোন একটি বাচ্চা মেয়ে, এবং সেই স্বর্গকে প্রহরার কাজে নিযুক্ত একজন রক্ষী- কি হবে এই যুগলবন্দীর পরিণতি? অবশ্যই পড়ুন সম্পূর্ণ উপন্যাস- 'দহনা'
দূর্যোধন ও…স্যূহধন
এটিই সেই জায়গা যেটা নিয়ে অনেক মানসিক অশান্তির
পর পৃথক দুটি সময়ের দুইটি ‘অল্টার্ড ইমেজ’ গড়ে তোলা হয়। মূল মহাকাব্যে ‘দূর্যোধন’ নামটির
সঙ্গে আমরা সুপরিচিত; এই নামের অর্থ- যাকে যুদ্ধে জয় করা অসম্ভব। কিন্তু অনুসন্ধান
করে জানতে পারি কিছু ক্ষেত্রে ‘স্যূহধন’ নামটিও ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ- ‘যে যুদ্ধবিদ্যায়
সুপারদর্শী’। এই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্টতই বিতর্ক দানা বেঁধে উঠেছে, একাংশের অভিমত বিষয়টি
ঠিক, কিন্তু বিরোধীপক্ষও গলা তুলে বলেই চলেছেন এটা কোনমতেই ঠিক নয়, এই নামে কোন চরিত্র
মহাকাব্যে আদৌ ছিল না!
যেহেতু মহর্ষি ব্যাসদেবের সাধের নাতভাইদের নাম
অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছি মানবধারায় ঘটে যাওয়া ক্রমটিতে, তাই এই খাতে আমি ‘দুর্যোধন’ নামটিই
ব্যবহার করেছি; গন্ধর্বদের সময়কালে অবশ্য অপর নামটি প্রয়োগ না করার কোন যুক্তিযুক্ত
কারণ খুঁজে পাই নি…
তবে এই সূত্রের কিছুটা বাত্যয় ঘটেছে বিশেষ কয়েকটি
ক্ষেত্রে। যেমন- কৌরবদের অন্ধ পিতা মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র। মহাকাব্য অনুযায়ী- তিনি দর্শনশক্তিরহিতও
ছিলেন, আবার অপর দিক দিয়ে দেখতে গেলে তিনি ছিলেন পুত্রস্নেহে অন্ধ! ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটিতে
এই বিষয়কেই কাজে লাগিয়েছি আমি, এই চরিত্রটিকে দুটি ভাগে বিশ্লিষ্ট করে। গন্ধর্বদের
সমসাময়িক যিনি, তিনি ‘ধৃতরাষ্ট্র’ নামেই পরিচিত এবং অন্ধ; কিন্তু পুত্রদের সুখ-সমৃদ্ধির
আশু তাড়নায় তার এই অন্ধত্ব যেন আলাদা মাত্রা পায়, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া, পুত্রদের
দুষ্কর্মকে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখা এবং সর্বোপরি- অসুরদের ষড়যন্ত্রে নিজেকে শরীক করে
নিয়ে সাম্রাজ্যের কলেবর বাড়ানোর দুর্মদ মোহে তিনি আক্ষরিক অর্থে অন্ধ হয়ে যান!
পড়ুন 'দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম উপন্যাস-সমগ্রের পাঁচটি স্মরণীয় মুহুর্ত্ত' সম্পর্কে লেখকের নিজস্ব মতামত এখানে
মানবদের সমসাময়িক ধৃতরাষ্ট্রের যে ‘অল্টার্ড
ইমেজ’- আমি সেক্ষেত্রে তার নামকরণ করেছি ‘কুরু’! জানি বিশুদ্ধবাদীরা আঁতকে উঠবেন এমনধারা
অদ্ভুত নামকরণের কথা শুনে…কৌরব-পাণ্ডবদের এই ‘একমেবাদ্বিতীয়তম্’ পূর্বপুরুষ, যার বিচরণক্ষেত্র
দুই পক্ষেরই প্রায় পনেরো প্রজন্ম আগে, হঠাৎ তাকে তুলে এনে যুদ্ধের মুখে ছেড়ে দেওয়া
কেন?এই বিষয়ে প্রথমেই যে অ্যালিবাই তা হল- আমি কিন্তু মূল মহাকাব্যের অনুকরণে কিছু
লিখছি না, আমার গল্পটি একান্তই নিজস্ব, মৌলিক, যার প্রেক্ষাপট মহাকাব্যের জন্মের আগে;
দ্বিতীয়ত, মহারাজ কুরুর নামে যে বংশটি প্রতিষ্ঠা পায়, জন্ম হয় প্রতিভাধর ও দিকপাল মহারাজদের,
সেই বংশের ধ্বংসের সময় কল্পিতভাবে সেই কীর্তিমান পূর্বপুরুষকে নতুন অবতারে ফিরিয়ে আনবার
নেপথ্যে যে ‘আয়রনি’, তা ব্যবহার করবার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারি নি। মহর্ষি ব্যাসের
সাথে একই সময়ে বিরাজমান এই কল্পিত ‘কুরু’ শারীরিকভাবে অন্ধ নন, কিন্তু পুত্রস্নেহে
অন্ধ হয়ে যান তিনি, ধৃতরাষ্ট্রের মতই! বিষয়টি প্রতীকি।
দেখুন 'মহাকালের মাঝে পর্ব১০' সম্পূর্ণ অডিও ন্যারেশান এখানে:
বিশেষ কারণবশতঃ মহাকাব্যটির একজন দৈবজাত চরিত্রের আসল নাম আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই চেপে গিয়েছি; বর্তমান সময়ের নিরিখে এটি সত্যিই ‘আগুন নিয়ে খেলা’ হয়ে যেত! তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস- গন্ধর্বদের সমসাময়িক ও পার্থের একান্ত সুহৃদ ‘অভয়ঙ্কর’ নামক এই চরিত্রটিকে আপনারা অবশ্যই চিনবেন।
'দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম' উপন্যাসসমগ্রটির মূল ধারাটি কি নিয়ে তা জানতে চান? দেখুন গল্পের প্লট নিয়ে 'আমার আলোচনা' এখানে
গন্ধর্বদের সময়সারণীতে এরপরই উঠে আসবে একটি পার্শ্বচরিত্রের নাম- ‘ময়দানব’! ‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটিতে একমাত্র গন্ধর্বদের সময়কালেই উঁকি মেরে গিয়েছেন এই প্রায়-বিলুপ্ত দানবপ্রজাতির শেষ গুটিকয় উত্তরপুরুষদের একজন দানব! দেবতাদের পরীক্ষাগারে তাদের বিবিধ পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত এই দানবটি তার চওড়া কপালের সৌজন্যে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন, সঙ্গে করে নিয়ে আসেন নিজের উন্নততর বুদ্ধি ও স্থাপত্যের কিছু কৌশল। ‘খাণ্ডব’ নামক অরণ্যের ভিতরে থেকে তিনি চেয়েছিলেন শান্ত ও নিরুদ্বিগ্ন একটি জীবন, কিন্তু বাদ সাধে গন্ধর্বরা! পাঁচ গন্ধর্ব ভাইদের সাথে একটি ‘অসৌজন্যমূলক’ সাক্ষাৎকারের পর ময়দানবের নির্ভেজাল স্বীকারোক্তি-
-“হাতের পাঁচ আঙ্গুল সমান হয় না, অজাতশত্রু।
‘দানব’ মাত্রই হিংস্র হয় না,
তাদের মধ্যেও ভালো-মন্দ মিশে থাকে। এমনিতেই প্রজাতিগতভাবে আমরা সংখ্যায় অনেক কম, তার
মধ্যে তোমাদের আগ্রাসী নীতি আমাদের প্রতিনিয়ত ঠেলে দিচ্ছে বিলুপ্তির পথে। আমাদের বিশাল,
কদাকার দেহ নিয়ে হয়তো তোমাদের চোখে আমরা হিংস্র, কিন্তু তোমাদের অনুপম সৌন্দর্যের নীচে
কিন্তু আমাদের থেকেও বেশি হিংস্রতা পাথরচাপা রয়েছে, এ কথা মনে রেখ!”
A Confession from the Writer's End Part1 on the Series of The Legacy of Ram- A Bengali science fiction action-adventure and Suspense novel by Aritra Das, the Author- complete article here
সুকৃতিসম্পন্ন এই দানবের কোন প্রয়োজন নেই মানবসভ্যতার
ধারাটিতে উঁকি মারবার, কারণ- ‘একা থাকাই মানবদের নিয়তি!’। এই কারণেই মহর্ষি ব্যাসদেবের
সমসাময়িক কোন দানবের উপস্থিতি গল্পে নেই।
‘লেগ্যাসি’ সমগ্রটি জুড়ে এরকম বহু পার্শ্বচরিত্রের উপস্থিতি রয়েছে; কখনও শুধু মানবধারায়, কখনও গন্ধর্বধারায়, কখনও উভয়ধারাতেই উপস্থিত, ভিন্ন ভিন্ন নামে। কিছু বিষয়গত সাদৃশ্য বাদে অবশ্য মূল মহাকাব্যের সঙ্গে এই চরিত্রগুলির কোন সম্পর্ক নেই, পুরো গল্পটিই মৌলিক এবং কল্পনাপ্রসূত। আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, গল্পটি কেমন লাগল তা পড়ে অবশ্যই আমায় জানাবেন। লিঙ্ক নীচে দেওয়া থাকল। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।
RELEVANT LINKS:
You may like to watch us on our YouTube channel
In case if you like to check my profile on Paratilipi to have a complete glimpse on my works!
Follow and Like our Page, stay connected to stay updated
In case you may want to twit us!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমাদের ব্লগগুলি আপনাদের কেমন লাগছে? অবশ্যই জানান আমাদের-