MahaKaler Majhe (মহাকালের মাঝে) Part18- A Bengali Historical Suspense fiction Paranormal story by Aritra Das
Bengali Historical audio story Paranormal | Mahakaaler Majhe- Part18 | মহাকালের মাঝে - পর্ব১৮
কি ঘটল আহীমের সাথে? পড়ুন মহাকালের মাঝে পর্ব১৬
Story read so far in this part18-
-“ক্র্যাকশট!”
পরিচিত
গলায় নিজের নাম শুনে চমকে উঠলেন তিনি; গোটা বিশ্বে একজনই ছিল যে তাকে এই নামে ডাকত,
কিন্তু সে তো আর বেঁচে নেই, তাহলে এখন-
সামনের
থকথকে কালো অন্ধকারের মধ্যে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজবার চেষ্টা করছিলেন নন্দীশ, এমন
সময় অন্ধকারের চাদর ফুঁড়ে যেন বাইরে বেরিয়ে এল অস্পষ্ট এক ছায়ামূর্ত্তি। অনেকখানি হেঁটে
সেটি যখন মুখোমুখি এসে দাঁড়াল নন্দীশের সামনে, অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন
তিনি!
তার
সামনেই তখন দাঁড়িয়ে সদ্যপ্রয়াত অবজার্ভার শ্রী গণেশ শঙ্কর তাম্বলে, যিনি আগেরদিনই মারা
গিয়েছেন নন্দীশের চোখের সামনে, ‘কাকের বাসা’ বলে পরিচিত ওয়াচ টাওয়ারের চূড়োয়! হাঁ হয়ে
তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন নন্দীশ; তারপর মাথা নীচু করে ফেললেন লজ্জায়। আর এই
প্রথমবার তিনি উপলব্ধি করলেন, সদ্যমৃত বন্ধুবর তাম্বলেকে চোখের সামনে জীবন্ত চলে-ফিরে
বেরাতে দেখেও তার মনে ভয় বা কৌতুহল- কোনটিই আসে নি; যেন এরকম মৃত্যুশীতল পরিবেশে তাম্বলের
উপস্থিতি নিতান্তই সাধারণ, স্বাভাবিক একটি ঘটনা!
========================================================================
শত্রুদের হাত থেকে কি শেষে পালাতে পারলেন নন্দীশ? অবশ্যই পড়ুন 'মহাকালের মাঝে পর্ব১৫'
=========================================================================
-“মাথা
নীচু করে ফেললে গোখলে? বেশ! জঙ্গলের মধ্যে ক্যামোফ্লজ্ করে থাকা একজন সৈনিককে খুঁজে
বের করা খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজবার মতই একটি অসম্ভব কাজ; তুমি স্বাভাবিক নিয়মেই তা পার
নি, এর দায় তোমার ওপর অর্শায় না। আর আমার মৃত্যু? মনে আছে আমাদের ট্রেনিং দেওয়ার সময়
ইনস্ট্রাক্টরের প্রথম নির্দেশ কি ছিল? কোনমতেই পোজিশনের কভার থেকে ওপরে যেন মাথা তোলা
না হয়! এই পাকামিটা আমার মারা, কাজেই আমার মৃত্যুর জন্য কোন অবস্থাতেই তোমায় দায়ী করা
যায় না!”
একটি
প্রকাণ্ড ভার যেন নেমে গেল নন্দীশের মাথা থেকে; তাম্বলের মৃত্যু যে তাকে ভিতরে ভিতরে
অস্থির করে তুলেছিল তা এতক্ষণে ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন তিনি। তার মনে হয়েছিল, তাম্বলের
মৃত্যুর একমাত্র কারণ ছিল বিপক্ষের শ্যুটারকে সময়মতন জঙ্গলে স্পট না করতে পারা; এখন
এই দায় থেকে স্বয়ং তাম্বলে তাকে অব্যাহতি দেওয়ায় কৃতজ্ঞ চোখ মেলে তিনি তাকালেন বন্ধুবরের
দিকে। তাম্বলেও এতক্ষণ স্থিরভাবে একমুখ হাসি নিয়ে দেখছিলেন বন্ধুর হাবভাব; এবারে নন্দীশ
মুখ তুলে তাকাতেই বললেন-
-“একটা
কথা মনে রেখ গোখলে ভাই…মানুষ তার নিজের নিয়তি নিজেই রচনা করে। আমি আমার মৃত্যু লিখে
ফেলেছিলাম সেই মুহুর্ত্তেই, যখন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত সতর্কতার মধ্যে থেকেও
হঠাৎ বসে একটি সিগারেট ধরাতে গিয়েছিলাম চরম অসতর্কতার নজীর সৃষ্টি করে; কাজেই আমার
মৃত্যুর জন্য কোনমতেই তুমি দায়ী নও! এখন আমরা আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব; তবে যাওয়ার আগে
আরও একজন আছেন যিনি তোমার সঙ্গে একবার দেখা করে যেতে চান-”
তাম্বলের
কথা শেষ হতেই এবারে অন্ধকারের মধ্য থেকে নন্দীশের কাছে এলেন ক্যাপ্টেন সুরেশ বেনিওয়াল,
তাদের ক্যাম্পের সদ্যপ্রয়াত কমাণ্ডার ইন-চার্জ, একমুখ হাসি নিয়ে। তাকে দেখে স্যালুট
ঠুকতে যাচ্ছিলেন নন্দীশ; মাঝপথেই তাকে থামিয়ে দিলেন তিনি। বললেন-
-“সবসময়েই
তোমার মধ্যে একটি প্রতিভা দেখতে পেতাম আমরা- জানতাম, আমার পর উপযুক্ত হাতে পড়তে চলেছে
আমাদের ইউনিটের জওয়ানরা। তোমরা যেরকম দুঃসাহসিকভাবে এগিয়ে চলেছ তাতে আমি নিঃসন্দেহ-
আমাদের দেশের আত্মাকে অন্তত কোন বহিরাগত শক্তি কখনোই ভাঙতে পারবে না! যাও, তোমার পথের
দ্বার খুলে গিয়েছে; এগিয়ে যাও চিন্তামুক্ত হয়ে! বিজয়ী ভব!”
==========================================================================
আহীম কি সক্ষম হলেন গ্রামের পাতালঘরে লুকিয়ে থাকা অপদেবতাকে মারতে? পড়ুন 'মহাকালের মাঝে পর্ব১৩'
=========================================================================
কমাণ্ডারের
দেখানো পথের দিকে তাকানোতে নন্দীশের চোখ পড়ল- অন্ধকার ফুঁড়ে হঠাৎ যেন আত্মপ্রকাশ করল
আলোকে ঘেরা একটি উজ্জ্বল, প্রদীপ্ত সুড়ঙ্গপথের প্রবেশপথ! ঘাড় ঘুরিয়ে কমাণ্ডারকে কিছু
বলতে যাবেন তিনি, এমন সময়ে দেখলেন, পিছনে কেউ নেই; ঐ সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই যেন একত্রে
অন্তর্হিত হয়েছেন দুজনেই! অস্ফূট স্বরে একবার ‘বিদায়’ বললেন নন্দীশ, তারপর পায়ে হেঁটে
প্রবেশ করলেন প্রদীপ্ত সুড়ঙ্গপথটিতে; আর তারপরই…গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেলেন তিনি!
-“নন্দীশ…নন্দীশ…ওঠ
এবারে, তোমাকে উঠতে হবে, ওঠ!”
নিজের
নাম শুনে আধো-অচেতন জগৎ থেকে হঠাৎ যেন জ্ঞান ফিরে পেলেন নন্দীশ; সম্পূর্ণ সজাগ হয়ে
উঠে চোখ মেলে বসলেন তিনি। একটি প্রায়ান্ধকার ঘরে রয়েছেন তিনি, কিন্তু ঘরটি সাদা রঙের
একটি কুয়াশার চাদর দ্বারা যেন সম্পূর্ণ ঢাকা; আর এর সঙ্গে বিচ্ছুরিত একটি মৃদু আলোর
আভাষ ঘরের অন্ধকারকে কিছুটা দূর করেছে। নন্দীশের মনে পড়ছে- তিনি তো ঢুকেছিলেন একটি
আলোকময় সুড়ঙ্গপথে, তাহলে এরকম একটা ঘরের মধ্যে আবার তিনি চলে এলেন কখন?
একটু
একটু করে কিছু কিছু দৃশ্য আবার মনে পড়ে যাচ্ছে নন্দীশের…আলোকময় সুড়ঙ্গপথটিতে ঢুকে তিনি
যখন গভীর ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিলেন, তখনই যেন কোন ছায়াছবির মত এই দৃশ্যগুলি তার মনে ভেসে
উঠছিল, বড়ই অদ্ভুত এবং ঘটনার সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন এই দৃশ্যগুলি!
একটি
তুষারাচ্ছন্ন পাহাড়ি পথ দিয়ে যেন একটানা হেঁটে চলেছেন নন্দীশ…সুদীর্ঘ সেই পথ, ফুরোতেই
যেন চাইছে না! এভাবে চলতে চলতে সন্ধ্যা হল; একটি গুহায় এসে থামলেন তিনি…আগুন জ্বাললেন…গুহার
বাইরে উঁকি মেরে দেখলেন…একটানা তুষারপাত…গুহার ভিতরে পাথরের একটি খাটো চাতাল…শুয়ে পড়লেন
তিনি…কি ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডা চাতালের মেঝেটা…!
পরদিন
সকাল…ঘুম ভেঙে উঠে বসলেন নন্দীশ…গোটা গায়ে অসহ্য যন্ত্রণা, মাথাটা যেন প্রচণ্ড ভারে
তুলতে পারছেন না তিনি…গুহার মুখ দিয়ে সূর্যের আলো ঢুকছে ভিতরে…কোনমতে উঠে বসলেন তিনি…পিছনে
একটি মধ্যম আকৃতির পাথরের স্তুপ…ওপরে একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী বসে ধ্যানমগ্ন অবস্থায়…কাছে
এগিয়ে তাকে দেখতে লাগলেন নন্দীশ…শান্ত, সমাহিত, সৌম্য মুখটিতে ভোরের সূর্যের নরম আলো…হাঁ
হয়ে সেই মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন তিনি…পুরো বিষয়টা যেন তার সঙ্গেই ঘটেছে বা ঘটছে;
প্রতিটি অনুভূতি যেন অনুভব করেছেন তিনি নিজের শরীরে, ঘুমের মধ্যে এমনটাই মনে হচ্ছিল
তার! কিন্তু এরকমটা কেন মনে হল? উত্তর নেই নন্দীশের কাছে।
স্মিত
আলোয় শ্বেতশুভ্র কুয়াসার চাদর ছিঁড়ে তার দিকে এগিয়ে এলেন এক সন্ন্যাসী মূর্ত্তি, একজন
কিশোরকে নিজের সাথে নিয়ে। নিজের স্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছিলেন নন্দীশ, এই হঠাৎ-অচেনা
দৃশ্যগুলিকে চোখের সামনে দেখে একটুখানি অন্যমনষ্ক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এখন ধীরপায়ে
মূর্ত্তিদুটি তার দিকে এগিয়ে আসতে ধীরে ধীরে মুখ তুললেন তিনি, আর সামনে তাকাতেই চমকে
উঠলেন একরাশ বিষ্ময়ে!
========================================================================
'দ্যা লেগ্যাসি অফ্ রাম' উপন্যাসসমগ্রের পাঁচটি স্মরণীয় মুহুর্ত্ত কি কি? অবশ্যই পড়ুন লেখকের নিজস্ব আলোচনা, জানুন লেখকের মতামত
========================================================================
আধো-অন্ধকার
ঘরের ফিকে হয়ে আসা আলোয় তিনি দেখলেন- তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সন্ন্যাসী মূর্ত্তিটি
সেই বৌদ্ধ ভিক্ষুর, যাকে তিনি সদ্য স্বপ্নে দেখেছেন আধো-তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায়! আর
তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরটির দিকে দৃষ্টি ঘুরতে যেন আরও হতবাক হয়ে গেলেন তিনি…এ
তো সেই কিশোর, যাকে তিনি স্বপ্নে দেখেছেন বেশ কয়েকবার! সেই চেহারা, সেই চোখমুখ, সেই
একই অভিব্যক্তি! কে এ?
-“তুমি
কি অবাক হয়ে গিয়েছ নন্দীশ?”
-“কে
আপনি? আমার নাম জানলেন কি করে?”
নন্দীশের
এই প্রতিপ্রশ্নে একটি স্মিতহাস্য বেরিয়ে এল বৌদ্ধ ভিক্ষুর মুখ দিয়ে; মন-ভালো করা একটি
সুন্দর হাসি হেসে বললেন তিনি-
-“আমার
বিশ্বাস কোন একটি সূত্র ধরে আমার নাম পূর্বে জেনেছ তুমি…আমি মহাযোগী মিলারেপা, ভগবন্
বুদ্ধের ধর্মমতে বিশ্বাসী একাধারে একজন শিক্ষক ও জীবন থেকে ক্রমাগত শিক্ষা নেওয়া একজন
ছাত্র…”
আরও
কিসব যেন বলছিলেন মিলারেপা নামধারী ভিক্ষুটি, কিন্তু বাকি কথাগুলি আর মাথায় ঢুকল না
নন্দীশের, নামটা শুনেই তিনি ব্যোমকে গিয়েছিলেন, অল্প কিছুক্ষণ পরে মিলারেপা তার বক্তব্য
শেষ করতেই চাপা বিরক্তি সহকারে তিনি বলে উঠলেন-
-“ননসেন্স!”
প্রবল
বিরক্তি সহকারে কথাটি শেষ করে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে বসে কি যেন ভাবলেন নন্দীশ; এই সময়কালটিতে
চুপ করে ছিলেন অভিজ্ঞ এই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী; তিনি জানেন মনকে শক্ত করার জন্য সময় দিতে
হয়। বেশ খানিকটা বিরতির পর আবার নন্দীশ বলে উঠলেন-
-“আপনি
মিথ্যে বলছেন! এ হতেই পারে না!”
-“হঠাৎ
ও কথা কেন?”- স্মিতহাস্যে জিজ্ঞাসা করলেন মিলারেপা।
বৌদ্ধ
ভিক্ষুর পোশাক পরা ও নিজেকে ‘মিলারেপা’ পরিচয় দেওয়া সৌম্যকান্ত, আপাতনিরীহ মানুষটির
কাছ থেকে আসা এরকম সরল প্রতিপ্রশ্নে হঠাৎ মাথা গরম হয়ে গেল নন্দীশের; এক ঝলক তাঁকে
দেখে নিয়ে তিনি বললেন-
-“তার
কারণ আমি ২০২০ খৃষ্টাব্দের মানুষ, এমন একটি সময় যেখানে ‘জ্ঞান’ জিনিষটিকে লোকে আক্ষরিক
অর্থে নিজের পকেটে নিয়ে ঘুরে বেরায়…যে ‘মিলারেপা’র কথা আপনি আমায় জানাতে এসেছেন তার
নাম ইয়েৎসুন মিলারেপা, জন্ম ১০৪০খৃীষ্টাব্দ, মৃত্যু ১১২৩ খৃীষ্টাব্দ…পশ্চিম তিব্বতের
এক ধনী পরিবারে জন্ম নেওয়া একজন মহাপুরুষ যার পিতৃদেবের মৃত্যুর পর তার কাকা ও পিসি
মিলে সমস্ত সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়…প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকা মিলারেপা এরপর ‘ব্ল্যাক
ম্যাজিক’ বা তন্ত্রসাধনা করে তার সমস্ত হৃত সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করেন অজস্র প্রাণ কেড়ে
নিয়ে…শেষে অনুতাপে জ্বলে তিনি বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। অপর এক বিখ্যাত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী
মরপ্ তাকে শিক্ষাদান করেন। মিলারেপাই একমাত্র ব্যক্তি যিনি কৈলাস পর্বতের শীর্ষদেশের
কাছাকাছি পৌঁছন এবং অক্ষতদেহে আবার নিজ সমাজে ফেরৎ আসেন…কে পাঠিয়েছেন আপনাকে? আপনি
চাইনিজদের সরাসরি বেতন পান নাকি কোন কমিশনড্ এজেন্ট? কর্ণেল ইয়ুফেই কোথায়…এই হতচ্ছাড়া
ঘরটাই বা কোন লোকেশনে…?”
=========================================================================
পড়ুন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে একটি মারণ ভাইরাসের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কিভাবে রুখে দাঁড়ালেন দত্তাত্রেয় ও তার সঙ্গীরা- পড়ুন 'অমৃতের মৃত্যু'
=========================================================================
এক
ঝটকায় নন্দীশের সব পুরোন কথা মনে পড়ে গেল, একটানা কথাগুলি উগড়ে দিলেন তিনি। শেষ যুদ্ধে
বেদীর ওপর উঠে ফ্লেয়ারগান ফায়ার করেছিলেন তিনি আকাশের দিকে, ফলে তার ব্যাকআপ টিম বুঝবে
যে মেসেজটি রিলে করা হয়েছে তা ভুয়ো; ক্যাম্প শত্রুসেনার দখলে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা
নেবেন তারা। এদিকে ক্ষণিকের অসতর্কতার জন্য গুলি খান নন্দীশ, এর পরের বিষয়টি অনুমান
করতে পারলেন তিনি। তার অচেতন দেহটি নিয়ে পালিয়ে আসতে পারেন কর্ণেল ইয়ুফেই, এখন নাটক
করে তার পেট থেকে কথা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে মাত্র, আর কিছু নয়! নিজেকে ‘মিলারেপা’
পরিচয় দেওয়া এই তিব্বতি বৌদ্ধটি যে প্রকাণ্ড ধাপ্পাবাজ এই নিয়ে আর কোন সন্দেহই নেই
তার মনে…কিন্তু…
-“আপনি
আমার সঙ্গে কোন ভাষায় কথা বলছেন নন্দীশ?”
দুটি
বিষয় নিয়েই খটকা জাগছিল তার মনে, এখন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীটি মুখ খোলাতে বিদ্যুৎচমকের মত
বিষয়টি খোলসা হল তার কাছে! নন্দীশ কথা বলছিলেন বিশুদ্ধ হিন্দীতে, আর মিলারেপা নামধারী
ঐ ব্যক্তিটি কথা বলছেন ‘বোডিক’ ভাষ্যে, যা একান্তভাবে তিব্বতের মূল ভূখণ্ডের নিজস্ব,
স্থানীয় ভাষ্য। তাহলে ওরা একে অপরের কথা এত সুন্দরভাবে বুঝছিলেন কি করে, যেখানে এই
স্থানীয় তিব্বতি ভাষাটি নন্দীশ একবর্ণও জানেন না, তাদের সীমানা-ঘেঁষা বহুল প্রচলিত
লেপচা ভাষাটি ছাড়া!
আর…ঐ
কিশোরটি! যতবার ওর দিকে চোখ যাচ্ছে ততবারই উদাসীন হয়ে যাচ্ছেন নন্দীশ। একটি দূর্ণিবার
আকর্ষণ অনুভব করছেন নন্দীশ কিশোরটির প্রতি; তার কেন যেন মনে হচ্ছে এই কিশোরটি তার বহুদিনের
চেনা, যেন শরীর ভিন্ন হলেও তাদের মন একই, মনের ‘চোখ’ দিয়ে তিনি যেন পরিষ্কার একাত্ম
হতে পারছেন কিশোরটির সঙ্গে! কিন্তু এ কিভাবে সম্ভব? মিলারেপার দিকে তাকাতেই আবার স্মিত
হাস্য হাসলেন তিনি; বড়ই সুন্দর, অনাবিল সেই হাসি!
-“এই
মুহুর্ত্তে তুমি আছ এমন একটি অবস্থানে, যেখানে মানুষের নয়, দেবতাদের রাজত্ব নন্দীশ!
সময় এখানে কোন প্রভাব ফেলতে পারে না, আর এই অবস্থানটির ভিতরে থাকা চরিত্রগুলির কখনই
বয়স বাড়ে না-”
-“বাজে
কথা রাখুন-” – মনের দ্বিধা কাটিয়ে কড়া গলায় বলে উঠলেন নন্দীশ- “আগে বলুন কোথায় আছি
আমরা? আর এসব কি ঘটছে? কি খাইয়েছেন আপনি আমায়? এইভাবে আপনারা আমার কাছ থেকে কিছু জানতে
পারবেন না-”
-“যদি
বলি আপনি এই মুহুর্ত্তে…কৈলাস পর্বতের ভিতরে?”
এক
ঝটকায় উঠে দাঁড়িয়ে মিলারেপা নামধারী ব্যক্তিটির মুখোমুখি দাঁড়ালেন নন্দীশ; তার দেহভঙ্গী
বলে দিচ্ছে কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি! ক্রমাণ্বয়ে হাতের মুঠি বন্ধ-খোলা করতে করতে
তিনি বললেন-
-“আমার
হাত-পায়ের বাঁধন খোলা রেখে আপনারা নিজেদের অশেষ দূর্গতি ডেকে এনেছেন…যা প্রশ্ন করেছি
তার উত্তর দিন- নাহলে আপনাদের-”
-“তুমি
আমাকে প্রহার করতে চাও, তাই না? বেশ! এগিয়ে এস! প্রহার কর তো দেখি আমায়!!”
=========================================================================
[চলবে...]
মহাকালের মাঝে পর্ব১৭ সম্পূর্ণ ভিডিওটি পাবেন এইখানে:
==================================================================
Want to get access to the whole video series? Watch out here
Want to check out my works? Here's my Pratilipi Profile
If you want to twit me- here's my twitter profile
Stay updated with latest news and releases on my page
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমাদের ব্লগগুলি আপনাদের কেমন লাগছে? অবশ্যই জানান আমাদের-